1. [email protected] : বাংলারকন্ঠ : বাংলারকন্ঠ
  2. [email protected] : বাংলারকন্ঠ.কম : বাংলারকন্ঠ.কম
  3. [email protected] : nayan : nayan
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৯ অপরাহ্ন

প্রাণঘাতী রোগ প্রতিরোধে খান আঁশযুক্ত খাবার

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৬৭ বার দেখা হয়েছে

স্বাস্থ্য ডেস্ক : প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার খুবই জরুরি। এটি যেমন কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে, তেমনি হজমের সমস্যা থেকেও দূরে রাখে।

শুধু তাই নয়, প্রাণঘাতী রোগ প্রতিরোধ করার জন্যও বেশি করে আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের। ২০১৮ সালে আঁশের ওপর গবেষণার একটি বড় রিভিউ ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত হয় এবং তা থেকে জানা যায় যে আঁশ কতটা উপকারী। এই পুষ্টিটি আসলেই অন্তত চারটি রোগের ঝুঁকি কমায়- যাদের কয়েকটির সঙ্গে অন্ত্রের সরাসরি সম্পর্ক নেই। রিভিউয়ে দেখা গেছে- আঁশযুক্ত খাবার খেলে হৃদরোগ, স্ট্রোক, টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়।

২৪৩টি গবেষণা বিশ্লেষণের মাধ্যমে গবেষকরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন। গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, যারা আঁশযুক্ত খাবার কম খেয়েছিল তাদের তুলনায় যারা আঁশযুক্ত খাবার বেশি খেয়েছিল তাদের হৃদরোগ, স্ট্রোক, টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায় এবং তাদের যেকোনো রোগে অকালে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ১৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ হ্রাস পায়। লোকজন আঁশযুক্ত খাবার যত বেশি খাবে, তাদের ঝুঁকি তত বেশি কমে যাবে। প্রতি ৮ গ্রাম অতিরিক্ত আঁশ খাওয়ার জন্য হৃদরোগ, টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি ৫ শতাংশ থেকে ২৭ শতাংশ হ্রাস পায়।

এই রিভিউয়ের উপাত্ত অনুসারে, প্রতিদিন ফল ও শাকসবজি থেকে ২৫-২৯ গ্রাম আঁশ খাওয়ায় এসব রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস পেয়েছিল এবং যারা আরো বেশি আঁশ খেয়েছিল তাদের ঝুঁকি আরো বেশি কমে যায়। যারা হোল গ্রেন (গোটা শস্য) খেয়েছিল তাদের মধ্যেও একই উপকারিতা দেখেন গবেষকরা।

নিউজিল্যান্ডে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব ওটাগোর প্রধান গবেষণা লেখক অ্যান্ড্রু রেনল্ডস বলেন, ‘আমাদের গবেষণা নির্দেশ করছে যে, লোকজনের প্রতিদিন খাবার থেকে ২৫-২৯ গ্রাম আঁশ খাওয়া উচিত। বর্তমানে অধিকাংশ লোক প্রতিদিন ২০ গ্রামের কম আঁশ খায়। তাই উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার জন্য সচেতনতা বাড়ালে এই টার্গেট পূরণ হতে পারে।’

আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার উপকারিতা কোনো নতুন বিষয় নয় এবং এই রিভিউটি পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের নির্ণয় করতে সাহায্য করবে যে, সর্বোচ্চ উপকারিতা পেতে একজন লোকের দিনে কতটুকু আঁশ খাওয়া প্রয়োজন। ডায়েটারি গাইডলাইন্স ফর আমেরিকানস প্রতিদিন নারীদের ২৫ গ্রাম এবং পুরুষদের ৩৮ গ্রাম আঁশ খেতে পরামর্শ দিচ্ছে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরামর্শ হচ্ছে, প্রাপ্তবয়স্কদের খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম আঁশ থাকা উচিত। এ তথ্যের সঙ্গে ল্যানসেটে প্রকাশিত রিভিউটির মিল রয়েছে।

হৃদরোগসহ কিছু ক্যানসার প্রতিরোধে আঁশের উপকারিতা এর আগেও বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া গেছে। আঁশযুক্ত খাবার তৃপ্তি বৃদ্ধি করে ও দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে- এটি স্থূলতার ঝুঁকি কমায়, যার সঙ্গে হৃদরোগ ও ক্যানসারের সংযোগ রয়েছে। আঁশ অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়াকেও প্ররোচিত করে, যা কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস করে।

বেশি করে আঁশ খেতে আপনার খাবার তালিকায় হোল গ্রেন বা গোটা শস্য, শাকসবজি, শিম, বিভিন্ন ধরনের ডাল এবং গোটা ফল যোগ করতে পারেন।

পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে, শাকের ক্ষেত্রে কচুশাক, মিষ্টি আলুর শাক, কলমিশাক, পুদিনা পাতা, পুঁইশাক, মুলাশাক, ডাঁটাশাক, লাউ শাক ও মিষ্টি কুমড়ার আগা-ডোগা শাকে প্রচুর আঁশ অংশ রয়েছে। অপেক্ষাকৃত বেশি আঁশযুক্ত সবজির মধ্যে রয়েছে সজনে, কলার মোচা, ঢেঁড়স, ডাঁটা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম, গাজর, পটোল, কচু, বেগুন, বরবটি, মটরশুঁটি। আঁশজাতীয় ফলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আঁশ অংশ থাকে বেল, পেয়ারা, কদবেল, আমড়া, আতাফল, নারকেল, কালোজামের মধ্যে।

এছাড়াও গাব, কামরাঙ্গা, পাকা টমেটো, পাকা আম, পাকা কাঁঠাল, আপেল ও আমলকীর মধ্যে মাঝারি পরিমাণে আঁশ থাকে। মটর, মুগ, ছোলা ও খেসারি ডালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আঁশ পাওয়া যায়। যব, ভুট্টা, আটা, তিল, কাঁচামরিচ ও সরিষাতেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আঁশ বিদ্যমান।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ