জেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ : অনিয়ম-দুর্নীতি করে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা খাদ্যগুদামের চাবি নিয়ে লাপাত্তার অভিযোগে সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাকিল আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
গত ২১ নভেম্বর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেবেকা সুলতানা রুবী বাদী হয়ে মুক্তাগাছা থানায় মামলা করেন। আলোচিত এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি গুদামে ৩২৯ মেট্রিক টন চাল ঘাটতি পাওয়ায় শাকিলকে সাময়িকভাবে বরখাস্তও করা হয়।
ময়মনসিংহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল কাদের বলেন, মুক্তাগাছা উপজেলা খাদ্য গুদামের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাকিল আহমেদের বদলির আদেশ হওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়ে দায়িত্ব হস্তান্তর না করে গাঁ ঢাকা দেন। এ ঘটনায় গুদামে চাল ঘাটতি রয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এমন সন্দেহে গত ২২ অক্টোবর পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে গুদামের তালা ভেঙে দীর্ঘ প্রায় একমাস তদন্ত কমিটি বাস্তব মজুদ যাচাই করেন। এতে ৯ হাজার ৯৭১টি বস্তায় ৩২৮ মেট্রিক টন ৯৮০ কেজি চাল ঘাটতি পান, যার বাজার মূল্য ১ কোটি ৭০ লাখ ৭ হাজার ২২৮ টাকা। ৩০ কেজি চালের খালি বস্তার ঘাটতি ১১ হাজার ৪৬৬টি এবং ৫০ কেজি চালের খালি বস্তার ঘাটতি ৩৮০টি। যার বাজার মূল্য ৭ লাখ ২৫ হাজার ৯৬০ টাকা। সব মিলিয়ে গুদাম কর্মকর্তা ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯৮ হাজার ২৪১ টাকার দুর্নীতি করেছেন।
আবদুল কাদের বলেন, এ ঘটনায় মুক্তাগাছা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেবেকা সুলতানা রুবী বাদী হয়ে শাকিলের নামে একটি মামলা করেন। একইসঙ্গে শাকিলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দুদক তদন্ত করছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে।
ময়মনসিংহ আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু নঈম মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, মুক্তাগাছা খাদ্যগুদামে মজুদকৃত চালের ঘাটতি পাওয়ায় একটি মামলা করা হয়েছে সাবেক গুদাম কর্মকর্তা শাকিলের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে নতুন ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তা হিসেবে সাইফুল ইসলামকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। শাকিলের বিরুদ্ধে অচিরেই বিভাগীয় মামলা হবে। পরে সেই মামলার তদন্তে অন্য কারও দায় আছে কিনা তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর মুক্তাগাছা উপজেলা খাদ্যগুদামের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ এর বদলির আদেশ হয়। ১২ অক্টোবর তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সাইফুল ইসলামকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি তা না করে ১৭ অক্টোবর থেকে গুদামের চাবি নিয়ে গাঁ ঢাকা দেন।
মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ বলেন, চাল আত্মসাতের অভিযোগ গত ২১ নভেম্বর সাবেক গুদাম কর্মকর্তা শাকিল আহমেদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি দুদক তদন্ত করছে। আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।