নিজস্ব প্রতিবেদক : বাজারে সাধারণত গরুর মাংস বিক্রি হয় ৭৫০-৮০০ টাকা কেজি। সেই গরুর মাংসের দাম প্রায় কেজিতে ২০০ টাকা কমেছে। ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন খলিলের গরুর মাংসের দোকানে। সকাল থেকেই মাংস কিনতে রীতিমতো লাইন ধরেছেন ক্রেতারা। কেউ কিনছেন দুই কেজি, আবার কেউ কিনছেন পাঁচ থেকে দশ কেজি।
রাজধানীর শাজাহানপুরের খলিল গোস্ত বিতানে ৫৯৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। এই মাংস কিনতে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। একলাইনে নারীরা মাংস ক্রয় করছেন, অন্য লাইনে পুরুষেরা। কমলা রঙের টিশার্ট পরিহিত দোকানের কর্মচারীরা একটার পর একটা গরু এনে জবাই করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন। এসব কিছুর দেখাশোনা করতে হিমশিম খাচ্ছেন দোকানের মালিক খলিল।
খলিলের মাংসের দোকানে সাধারণত ৮০০ টাকা কেজি ধরে মাংস বিক্রি হয় তবে ডিসকাউন্ট দেওয়ায় এখন মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৯৫ টাকা কেজি। ডিসকাউন্টের চতুর্থ দিন চলছে আজ শুক্রবার (২৪ নভেম্বর)। পাশেই বিক্রি হচ্ছে খাসির মাংস তবে সেখানে ভিড় কম।
দোকানের কর্মচারীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, এখানে দিনে প্রায় ৩০-৩২টি গরু বিক্রি হচ্ছে। কেউ ১০ কেজি মাংস চাইলেও নিতে পারে আবার কেউ ১ কেজি কিংবা ২৫০ গ্রাম মাংসও নিতে পারে। মূলত এই অফারটি দেওয়া হয়েছে দরিদ্র মানুষের জন্য। তারা যেন সাধ্যের মধ্যে মাংস কিনে খেতে পারেন। অন্য সময় ভিড় থাকলেও বর্তমানে অনেক বেশি ভিড় হচ্ছে। অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে মাংস কিনতে আসছেন।
শাহবাগ থেকে মাংস কিনতে এসেছেন আনিসুর হাসান। তিনি বলেন, মাংস তো ৮০০ টাকা কেজি কিনতে হয়। এখানে দাম কম তাই ৫ কেজি কিনতে এসেছি। তবে লাইনে থাকতে হয়েছে ৩০ মিনিটেরও বেশি। মাংস ফ্রেশ, অনেকেই বলেছিলো ফ্রিজের মাংস কিন্তু না। সরাসরি জবাই করেই মাংস বিক্রি হচ্ছে।
যাত্রাবাড়ী থেকে আসা সুমাইয়া নামের একজন বলেন, সকালে শুনলাম এখানে মাংস কম দামে বিক্রি হচ্ছে তাই আসলাম। লাইনে দাঁড়িয়েছি দেখি এখন কতক্ষণ লাগে। মাংসও ভালো দেখা যাচ্ছে।
খলিল গোস্ত বিতানের আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের এই অফার এখন চলছে। কয়দিন চলবে তার নিশ্চয়তা নেই। ফ্রেশ মাংস বিক্রি করছি আমরা। আমি এখানে ৪০ বছর ধরে আছি।
আগে তো ৮০০ টাকা বিক্রি করতেন এখন কম দামে বিক্রি করায় লস হচ্ছে না? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হরতাল-অবরোধের কারণে বিয়েসহ অনেক অনুষ্ঠান কম হচ্ছে। গাবতলীর হাটে যেসব গরু এসে জমেছে সেসব পাইকাররা ছাড়িয়ে দিচ্ছে লস দিয়ে কারণ একটা গরু একদিন রাখলেই ১০০০ টাকার খাবার খায়। গরুর যোগান বেশি চাহিদা কম। তাই একটু কম দামে বিক্রি করছি।
অবশেষে ভিড় ঠেলে পাওয়া গেলো খলিলকে। তিনি বলেন, প্রতি বছর এই সময়ে আমরা কোনো না কোনো ডিসকাউন্ট দেই। এটা আর দুই-তিন দিন চলবে। একটু লস হলেও সবার কথা ভেবে বিক্রি করছি।