1. [email protected] : বাংলারকন্ঠ : বাংলারকন্ঠ
  2. [email protected] : বাংলারকন্ঠ.কম : বাংলারকন্ঠ.কম
  3. [email protected] : nayan : nayan
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ অপরাহ্ন

জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তি সংক্রান্ত নীতিমালা জারি

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৮৩ বার দেখা হয়েছে
bangladesh-bank-

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঋণের বিপরীতে জামানত রাখতে হয় ব্যাংকগুলোর নিকট। আর এই জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির তালিকাভুক্তির নীতিমালা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নীতিমালা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবেদন করতে হবে। যাচাই-বাছাই করে যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তালিকাভুক্ত এসব উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান দিয়েই ব্যাংকগুলো ঋণ দেওয়ার পূর্বে জামানত মূল্যায়ন করাতে হবে। তবে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ মঞ্জুর করতে ব্যাংকগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জামানত মূল্যায়ন করতে পারবে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করে দেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংক এবং জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর নিকট পাঠিয়েছে।

নীতিমালা সংক্রান্ত সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংক কোম্পানি (সংশোধন) আইন, ২০২৩ এর মাধ্যমে ধারা ২৯-ক সংযোজন করা হয়েছে। উক্ত ধারার উদ্দেশ্যপূরণ করতে কোনো ব্যাংকের ঋণ (ইসলামী শরিয়াহ্ ভিত্তিক ব্যাংকের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ) গ্রহীতা কর্তৃক গৃহীত বা গৃহীতব্য ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত জামানত মূল্যায়নের জন্য যোগ্য জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকে তালিকাভুক্ত হতে হবে।

ঋণ ঝুঁকি প্রশমনে ব্যাংক কর্তৃক ঋণগ্রহীতার নিকট থেকে সাধারণত স্থাবর সম্পত্তি যথা জমি ও ইমারত এবং অস্থাবর সম্পত্তি তথা মেশিনারিজ, সহজে বিপণনযোগ্য দ্রব্যাদি প্রভৃতি জামানত হিসেবে গ্রহণ করা হয়ে থাকে। ব্যাংকিং খাতে ঋণের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, ঋণ শৃঙ্খলা বজায় রাখা, খেলাপী ঋণ আদায়, অবলোপন, নন ব্যাংকিং সম্পদ অন্তর্ভুক্তিকরণ, ঋণ পুনঃতফসিলিকরণসহ শ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতে রক্ষিতব্য প্রভিশন সঠিকভাবে হিসাবায়ন ইত্যাদি প্রয়োজনে ঋণের বিপরীতে গৃহীত জামানতের যথাযথ ও নির্ভরযোগ্য মূল্যায়ন অতীব জরুরি। যথাযথ ও নির্ভরযোগ্য মূল্যায়ন নিশ্চিতকরণের জন্য যোগ্য জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ন্যূনতম যোগ্যতা ও উপযুক্ততা নির্ধারণ সাপেক্ষে তালিকাভুক্তি এবং তালিকা প্রকাশ অত্যাবশ্যক। কোনো ব্যাংকের ঋণ গ্রহীতা কর্তৃক গৃহীত বা গৃহীতব্য ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত জামানত মূল্যায়নের জন্য যোগ্য জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটি সুনির্দিষ্ট, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে তালিকাভুক্তির জন্য এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হলো।

নীতিমালা জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম যোগ্যতা ও অযোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, তালিকাভুক্তির আবেদন দাখিল করার সময় প্রতিষ্ঠানের প্রধান মূল্যায়কের সর্বোচ্চ বয়সসীমা হতে হবে ৭৫ বছর। বাংলাদেশ সার্ভে অ্যান্ড ভ্যালুয়েশন কোম্পানিজ, ফার্মস অ্যান্ড ইন্ডিভিজুয়াল কন্সার্নস এসোসিয়েশন (বিএসভিসিএফআইসিএ); বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স সার্ভেয়ার্স এসোসিয়েশন; অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় সমজাতীয় স্বীকৃত কোনো পেশাজীবী সংগঠন বা ইনস্টিটিউশন বা এসোসিয়েশনের মধ্যে ন্যূনতম একটির সদস্যপদ থাকতে হবে।

সংগঠনের সদস্য ছাড়াও ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ এবং ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট একাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ এর সদস্য এ সার্কুলারে উল্লেখিত শর্তসমূহ পূরণ সাপেক্ষে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করতে পারবে; ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান/সরকারি প্রতিষ্ঠান/ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি/মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের সার্ভে/ভ্যালুয়েশন কাজে ন্যূনতম ৩ বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে; জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে ব্যক্তি মালিকানাধীন, অংশীদারী বা লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে বিদ্যমান আইনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিবন্ধন থাকতে হবে।

জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানে দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবল (হিসাবরক্ষক, পুরপ্রকৌশলী, যন্ত্রপ্রকৌশলী, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ইত্যাদি- প্রযোজন অনুসারে) এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সার্ভেয়ার থাকতে হবে। মূল্যায়ন কাজে প্রতিষ্ঠানের আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সুবিধা থাকতে হবে।

জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তালিকাভুক্তিতে কতিপয় অধিকতর যোগ্যতা অগ্রাধিকার প্রাপ্তির জন্য বিবেচিত হবে। তবে উক্ত যোগ্যতা ব্যতিরেকেও কোনো প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। যেমন-প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কাজে নতুন প্রযুক্তি আত্তীকরণের সক্ষমতা।

জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী জনবলের মধ্যে কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট একাউন্ট (সিএমএ), চাটার্ড একাউন্টেন্ট (সিএ, এসিসিএ), চাটার্ড ফাইন্যান্সিয়াল এনালিস্ট (সিএফএ), চাটার্ড জেনারেল একাউন্টেন্ট (সিজিএ), চাটার্ড গ্লোবাল ম্যানেজমেন্ট একাউন্টেন্ট (সিজিএমএ), চাটার্ড একাউন্টিং টেকনিশিয়ান (সিএটি), সার্টিফাইড ভ্যালুয়েশন এনালিস্ট (সিভিএ) ফাইন্যান্সিয়াল মডেলিং অ্যান্ড ভ্যালুয়েশন এনালিস্ট (এফএমভিএ) ইত্যাদি প্রফেশনাল ডিগ্রিধারীর অন্তর্ভুক্তি থাকতে হবে। ন্যূনতম ৩টি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তালিকাভুক্ত থাকা। প্রধান মূল্যায়ক/সার্ভেয়ারের সংশ্লিষ্ট কাজে ৫ বছর বা তার অধিক সময়ের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি ৬ মাস পরপর অর্থাৎ জুন ও ডিসেম্বরের ১ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে আবেদন করতে পারবে। আবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক তালিকাভুক্তির কার্যক্রম শুরু হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের আবেদন মূল্যায়ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পঞ্জিকাবর্ষের প্রতি ষান্মাষিকে যোগ্য জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করবে। জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ৩ বছর। জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকে তালিকাভুক্তির তারিখ হতে প্রতি ৩ বছর পর (মেয়াদপূর্তির ৬ মাস পূর্বে) পুনরায় তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করতে হবে। তবে উল্লেখ থাকে যে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক তালিকাভুক্তির সময়ে প্রদত্ত শর্ত/নির্দেশনা সঠিকভাবে পরিপালন করতে ব্যর্থ হলে, কিংবা কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণে ৩ বছরের পূর্বে যেকোনো সময়ে কোনো প্রতিষ্ঠানকে অ-তালিকাভুক্ত করতে পারবে।

জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যে নামেই অভিহিত হোক না কেন) ও প্রধান মূল্যায়ক বা সার্ভেয়ার পরিবর্তন হলে পরিবর্তনের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে উক্ত পরিবর্তনের ৩০ দিনের মধ্যে অবহিত করতে হবে।

জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য করা নীতিমালায় সাধারন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অনূর্ধ্ব ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ মঞ্জুরি, সীমা বর্ধিতকরণ বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নবায়নের সময় ঋণের বিপরীতে গৃহীত বা গৃহীতব্য সম্পত্তি, মালামাল, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি মূল্যায়ন ব্যাংকের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান দ্বারাও বন্ধকীকৃত বা বন্ধকীতব্য সম্পত্তির মূল্যায়ন করতে পারবে।

১ কোটি টাকা ও তদূর্ধ্ব অংকের ঋণ মঞ্জুরি, বর্ধিতকরণ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নবায়নের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জামানত বা সহজামানত হিসেবে গৃহীত বা গৃহীতব্য সম্পত্তি, মালামাল, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি মূল্যায়ন করতে হবে। জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উক্ত মূল্যায়ন যথাযথভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তালিকাভুক্ত জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যাংক তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়ও উক্ত জামানত মূল্যায়ন করতে পারবে।

১০০ কোটি টাকা বা তদূর্ধ্ব অঙ্কের ঋণ মঞ্জুরি, বর্ধিতকরণের বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নবায়নের সময় গৃহীত বা গৃহীতব্য জামানত (সম্পত্তি, মালামাল, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি) ন্যূনতম দুইটি জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান দ্বারা পৃথকভাবে মূল্যায়ন করাতে হবে।

একাধিক মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান বা মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যাংকের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মূল্যায়নের ক্ষেত্রে উভয়পক্ষের মূল্যায়নের মধ্যে যে মূল্যায়ন ব্যাংকের জন্য অধিকতর অনুকূলে হবে তা গ্রহণ করতে হবে। তবে উভয় মূল্যায়নের ব্যবধান ২০ শতাংশের অধিক হলে ব্যাংক মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট ব্যাখ্যা চাইতে পারবে।

অ-ব্যাংকিং সম্পদসহ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অন্যান্য যেসব ক্ষেত্রে পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান বা মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মূল্যায়নের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে সেসব ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান দ্বারা মূল্যায়ন করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যাংকের ঋণের জামানত মূল্যায়ন সংক্রান্ত কার্যক্রমে অপর কোনো জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানকে (তালিকাভুক্ত অথবা তালিকাভুক্ত নয়) অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে না। তবে প্রয়োজনে এ সংক্রান্ত কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন করার নিমিত্ত বিশেষ দক্ষতা বা প্রযুক্তিগত দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিকে উপদেষ্টা/পরামর্শক হিসেবে নিযুক্ত করা যাবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ