নিজস্ব প্রতিবেদক : বিজয় উদযাপন ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদের স্মরণে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে নেমেছে মানুষের ঢল। হাজারো মানুষ ফুলেল শ্রদ্ধায় স্মরণ করছেন দেশ মাতৃকার টানে জীবন উৎসর্গকারীদের।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) প্রথম প্রহরে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা সৌধ এলাকা ত্যাগ করার পরপরই জনসাধারণের জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
সকাল থেকেই অনেকেই শ্রদ্ধা জানাতে আশপাশে অপেক্ষা করছিলেন। স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করার পর সারিবদ্ধভাবে তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভিড়। জনসমাগম রুপ নেয় জনসমুদ্রে। নারী-পুরুষনির্বিশেষে সব বয়সী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বেদিতে ফুল দিয়েছেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা-ভালোবাসার ফুলে ভরে ওঠে স্মৃতিসৌধের বেদি। তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন শ্রেণির অনেককে দেখা গেল, স্মৃতিস্তম্ভ পেছনে রেখে একা, যুগল, দলবেঁধে মুঠোফোনে সেলফি তুলছেন।
সাভারের আশুলিয়া থেকে স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম বলেন, এই দিনটি ভীষণ গৌরবের। আর সেটিকে উদযাপনে এখানে আসা।
তানিয়া আক্তার নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেটিকে অস্বীকার করে জাতি এগিয়ে যেতে পারবে না। আর বিজয় দিবস একটি দিন, যেদিন আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আবার ঝালিয়ে নিতে পারি। যেনো সারা বছর এটিকে লালন করতে পারি।
আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক সাইফুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন, প্রতি বছর পুরো পরিবারসহ এখানে আসি। প্রচুর মানুষ আসে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আমাদের যে ভালোবাসা তার প্রমাণ এটি।
এছাড়া শ্রদ্ধা জানাতে আসেন রাজনীতিক, কূটনীতিক, সমাজকর্মী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী শিল্পী-বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, পেশাজীবী, শ্রমিক, শিক্ষার্থী, সর্বোপরি সাধারণ মানুষ।
ভিভিআইপি যাতায়াতের কারণে ভোর রাত থেকেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানবাহন ও মানুষের চলাচল বন্ধ করা হয়। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধ ত্যাগ করার পর মহাসড়ক ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর আগে দিবসটি পালনে জাতীয় স্মৃতিসৌধকে প্রায় এক মাস ধরে ধুয়ে-মুছে, রংতুলির আচড় ও রঙ-বেরঙের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। সেই সাথে স্মৃতিসৌধে আগত দর্শনার্থীসহ সবার নিরাপত্তা ও কোনো প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এখানকার পুলিশ ও আনসার ক্যাম্পকে সর্বোচ্চ সকর্কতামূলক অবস্থানে রাখা হয়েছে।
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মহান বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে যেন কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে না পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।