ক্রীড়া ডেস্ক : শেখ পারভেজ জীবনের ঘূর্ণিতে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন ওমিদ রেহমান। বল উঠে যায় আকাশে। দৌড় গিয়ে শিহাব জেমস তালুবন্দি করতেই শুরু হয়ে যায় লাল-সবুজের যুবাদের বুনো উল্লাস। এরপর গ্যালারিতে থাকা বাংলাদেশি ভক্তদের অভিবাদনের জবাবে সিক্ত হয় মাহফুজুর রহমান রাব্বির দল।
২০২০ সালে যুবাদের হাত ধরে বিশ্বকাপ জিতে দেশের ইতিহাসে কোনো পর্যায়ে প্রথমবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তিন বছরের ব্যবধানে এবার লাল-সবুজের শো-কেসে এলো এশিয়া কাপের ট্রফি।
দুবাইয়ে রোববার (১৭ ডিসেম্বর) যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে উড়িয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপে শিরোপার দেখা পায় বাংলাদেশ। ব্যাটিং কিংবা বোলিং কোনো বিভাগেই আমিরাত লড়াইটুকু করতে পারেনি।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে আশিকুর রহমান শিবলীর দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভর করে ৮ উইকেটে ২৮২ রান করে বাংলাদেশ। তাড়া করতে নেমে মাত্র ৮৭ রানে অলআউট হয় আমিরাত। ১৯৫ রানে জিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
ব্যাট হাতে দুর্দান্ত প্রদর্শনীর বল হাতে হিংস্র, ক্ষ্যাপাটে যুবাদের আক্রমণে অসহায় আমিরাতের ব্যাটাররা ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। মারুফ মৃধা-রহমানুল্লাহ দৌলা বর্ষণের আক্রমণে ৪৫ রান করতেই দলটি হারিয়ে ফেলে ৫ উইকেট।
ধ্রুব পারাশার সর্বোচ্চ ২৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন। এ ছাড়া দুই অঙ্কের ঘর পেরোতে পেরেছেন মাত্র এক ব্যাটার। বাকিরা আউট হয়েছেন শূন্য থেকে ৯ রানের মধ্যে। মারুফ-বর্ষণ সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন। মাঝে ইকবাল হোসেন ইমন পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন।
এর আগে শিবলীর সেঞ্চুরির সঙ্গে চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান-আরিফুল ইসলামের ফিফটিতে বাংলাদেশ ২৮৩ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়। ১৪ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর শিবলি-রিজওয়ান জুটি গড়ে এগোতে থাকেন। ৬০ রানে রিজওয়ান আউট হলে ভাঙে ১২৫ রানের জুটি। এক প্রান্তে দেয়াল হয়ে খেলতে থাকেন শিবলী। সেই সুবিধা কাজে লাগিয়ে আরিফুল মাত্র ৩৯ বলে ফিফটি তুলে নেন।
আর শিবলীর ব্যাট থেকে আসে অনবদ্য শতক। ১২৯ বলে ১০ চারে চলতি টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় শতক হাঁকান শিবলী। শেষ পর্যন্ত আউট হন ১২৯ রানে। শিবলী এখন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। শেষ দিকে মাত্র ১১ বলে ২১ রান করেন অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি। আমিরাতের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন আয়মান আহমেদ।
গ্রুপ-বি থেকে আমিরাতকে হারিয়ে চলতি আসরে বাংলাদেশের পথচলা শুরু হয়। এরপর জাপান-শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে নিশ্চিত করে সেমিফাইনাল। শেষ চারে এশিয়া কাপের সবচেয়ে সফল দল ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে নাম লেখায় বাংলাদেশ। শেষটাও আমিরাতকে দিয়েই করলো টাইগাররা।