ডেস্ক রিপোর্ট : মরমী সাধনার প্রধান পথিকৃৎ দেওয়ান হাসন রাজার ১৭০তম জন্মদিন আজ। ১৮৫৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ শহরের নিকটবর্তী সুরমা নদীর তীরে তেঘরিয়া গ্রামে তার জন্ম।
হাসন রাজা ছিলেন জমিদার পরিবারের সন্তান। তার বাবা দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী ছিলেন প্রতাপশালী জমিদার। হাসন রাজা তার দ্বিতীয় ছেলে। মায়ের নাম হুরমত জাহান। জন্মের পর তার নামকরণ হয়েছিলো অহিদুর রাজা। পরে সিলেটে ডেপুটি কমিশনার অফিসের এক ফার্সি ভাষাভিজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শে তার নাম হয়ে যায় হাসন রাজা।
তার যৌবন ছিলো আমোদ-ফুর্তিতে ভরপুর। বিলাসবহুল সৌখিন জীবনে অভ্যস্ত হাসন আসক্ত ছিলেন নারীসঙ্গে। অবশ্য পরিনত বয়সে পৌঁছে আমূল বদলে যান হাসন রাজা। তা এতটাই যে, মানুষের মনের ঘৃণার স্থলটি জয় করে নিলেন ভালবাসায়।
অনেকেই মরমী সাধক লালন শাহ্’র পরই হাসন রাজাকে স্থান দেন। তিনি কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেননি। তবে স্বশিক্ষিত। তিনি সহজ-সরল সুরে আঞ্চলিক ভাষায় প্রায় সহস্রাধিক গান রচনা করেন। তার এসব গান আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
‘লোকে বলে বলেরে ঘর-বাড়ি ভালা নাই আমার-কি ঘর বানাইমু আমি শূন্যেরও মাঝার’, ‘মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দী হইয়া রে কান্দে হাসন রাজার মনমুনিয়া রে’, ‘আমি না লইলাম আল্লাজির নাম না কইলাম তার কাম- বৃথা কাজে হাসন রাজায় দিন গুজাইলাম’, ‘সোনা বন্ধে আমারে দেওয়ানা বানাইলো সোনা বন্ধে আমারে পাগল করিল- আরে না জানি কি মন্ত্র করি জাদু করিল’- এগুলো হাসন রাজারই গান।
১৯২২ সালের ৬ ডিসেম্বর তিনি প্রয়াত হন। সুনামগঞ্জ পৌর এলাকায় গাজীর দরগা নামক পারিবারিক কবরস্থানে প্রিয়তম মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শুয়ে আছেন মরমী কবি হাসন রাজা। এ কবরখানা মৃত্যুর পুর্বেই তিনি নিজেই প্রস্তুত করেন।