নিজস্ব প্রতিবেদক : সৌদি আরব সব দেশের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল-দুহাইলান।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে গ্রিন জোন হিসেবে বিবেচনা করা যায়। সৌদি আরব বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনা করে। এখানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভালো রেকর্ড। বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সৌদি আরব সরকারের ইতিবাচক মনোভাব আছে।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) হারনেট ফাউন্ডেশনের সৌজন্যে ও হারনেট টিভির পরিচালনায় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দূতাবাসের সহযোগিতায় সৌদি দূতাবাসে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ডিসাইডস: দ্য ইয়ুথ স্পিকস’-এর ট্রান্সফরমেটিভ কথোপকথন ইভেন্টের পঞ্চম এবং সমাপনী পর্বে সভাপতির বক্তব্যে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরবের অর্থনৈতিক কূটনীতি, রপ্তানিবাজার বহুমুখীকরণ, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনা ইতিবাচক। বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পথে আছে। ২০২৫ সালের লক্ষ্যমাত্রা, ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা এবং ২১০০ সালের লক্ষ্যমাত্রা—সকল ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ সঠিক অবস্থানেই আছে। এমন বাস্তবতায় দুই দেশের একই ধরনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির ভালো সুযোগ রয়েছে।
পরিকল্পিত শিল্পনগর গড়ে তোলার পেছনে বর্তমান সরকারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, চট্টগ্রামের মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলা নিয়ে গঠিত বাংলাদেশের প্রথম ও পরিকল্পিত শিল্পনগরে বিনিয়োগের আগ্রহ আছে সৌদি আরবের।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের সকল জনগণ এক্ষেত্রে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে ইয়ং ডেলিগেটসদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে বৈদেশিক অনুদান ও ঋণ নিয়ে একটি উপস্থাপনায় বিভিন্ন তথ্য ও যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিষয়টিকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ’র ডেপুটি রাষ্ট্রদূত বার্নড স্পেনিয়ার বলেন, সহায়তার মানে সব সময় অর্থ প্রদান নয়, দক্ষতা শেয়ার করাও বড় সহায়তা।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে আরও অনেক কিছু করার আছে।
অনুষ্ঠানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাদেকা হালিম, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাংলাদেশি ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এনএসডিএ’র প্রধান সমন্বয়কারী আখতার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আতিকুল ইসলাম। হারনেট টিভি এবং হারনেট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সিইও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলিশা প্রধান সংলাপের মডারেশনের সভাপতিত্ব করেন।
উল্লেখ্য, ‘বাংলাদেশ ডিসাইডস: দ্য ইয়ুথ স্পিকস (বিডিওয়াইএস)’ নামক মূল বিষয়টি হারনেট টিভির প্রতিষ্ঠাতা সিইও ও এমডি আলিশা প্রধানের নিজস্ব কল্পনা এবং ধারণাপ্রসূত। এই প্ল্যাটফর্মের লক্ষ্য—বাংলাদেশের তরুণদের মুখোমুখি হওয়া, তাদের বহুমুখী চ্যালেঞ্জগুলোকে অন্বেষণ এবং মোকাবিলা করা।
অনুষ্ঠানে এসইআইডি ট্রাস্ট এবং ‘ইটস হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন’-এর সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে।
অনুষ্ঠানের সংলাপ পর্বে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। এই পর্বের বিষয়বস্তু ছিল— ‘Global Dynamics: Foreign Aid, National Sovereignty, and the Roles of Public and Private Sectors in Development’।