1. [email protected] : বাংলারকন্ঠ : বাংলারকন্ঠ
  2. [email protected] : বাংলারকন্ঠ.কম : বাংলারকন্ঠ.কম
  3. [email protected] : nayan : nayan
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ পূর্বাহ্ন
হেডলাইন :
ওয়ালটন ডেস্কটপে বিশাল মূল্যহ্রাস, অনলাইন অর্ডারে আরো ১০% ছাড় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যাত্রাবাড়ী-ডেমরায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন ওয়ালটনের সঙ্গে সিটি ব্যাংকের এমপ্লয়ি গ্রিন ব্যাংকিং চুক্তি  নারায়ণগঞ্জে সোনালী ব্যাংকের মিট দ্য বরোয়ার ও গ্রাহক সমাবেশ ভোজ্যতেল আমদানিতে ভ্যাট কমল আরও ৫ শতাংশ শিক্ষায় কমপক্ষে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হবে: তারেক রহমান এবার ভরিতে ২৯৩৯ টাকা বাড়ল সোনার দাম ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত ডিসেম্বরের মধ্যে এডিবি-বিশ্বব্যাংক থেকে ১১০ কোটি ডলার পাবে বাংলাদেশ বিদেশি এলএনজি দেশে জলবায়ু ঝুঁকি তৈরি করছে

নিউজিল্যান্ডে বড়দিন: নেপিয়ারের টে মাটা পিকে আমরা

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৯৪ বার দেখা হয়েছে

মিলটন আহমেদ : নিউজিল্যান্ডের নেপিয়ারে আজ আমার চতুর্থ দিন। এখানে সূর্য অস্ত যায় সাড়ে নয়টার দিকে। স্বাভাবিকভাবেই দিন এখানে অনেক বড়। কিন্তু ডিসেম্বর মাসে সবসময়ই বাংলাদেশে দিন ছোট। তবু এই দিনটিকে ‘বড়দিন’ কেন বলা হয়? ভাবনার তেমন কিছু নেই। আসলে এই বড়দিন সেই বড়দিন না। এই বড়দিনকে মানুষ আরও একটি নামে জানে- ক্রিসমাস ডে।

এটি মূলত প্রতি বছরের একটি খ্রিষ্টীয় উৎসব। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা দিনটিকে ধর্মীয় উৎসবের দিন হিসেবে পালন করেন। পঁচিশে ডিসেম্বর তারিখে যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন উপলক্ষ্যে মূলত এই উৎসব বা বড়দিন পালন করা হয়। তবে পঁচিশে ডিসেম্বরই যে যিশুখ্রিষ্টের প্রকৃত জন্মদিন তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। খ্রিষ্টানদের বিশ্বাস অনুযায়ী এই তারিখের ঠিক নয় মাস আগে মেরির গর্ভে প্রবেশ করেন যিশু। আর সেই হিসাব ধরে পঁচিশে ডিসেম্বর তারিখটিকে যিশুর জন্মদিন ধরে নেয়া হয়।

ছোটবেলা থেকেই জেনে এসেছি পৃথিবীজুড়ে বড়দিন উদযাপন করা হয় মহা সমারোহে- খুবই স্বাভাবিক। বিশ্বজুড়ে শত কোটি খ্রিষ্টান ধর্মের মানুষের বাস। তাই এই বিশেষ দিনটি পালিত হবে জাঁকজমকপূর্ণভাবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু নিউজিল্যান্ডে এসে আমার তথা আমাদের সবার ধারণা বেমালুম ভুল প্রমাণিত হলো বৈকি। গত কয়েকদিনে নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ আইল্যান্ডের ডানেডিন, নেলসনে ঘুরে এখন উত্তর আইল্যান্ডের নেপিয়ারে আছি। সমগ্র নিউজিল্যান্ডে কর্মব্যস্ততা নয়টা থেকে পাঁচটা। এর কোনো ব্যতিক্রম হতে দেখিনি। আমাদের দেশে যেমন রমজান মাসে মার্কেট রাতে একটু বেশি সময় পর্যন্ত খোলা রাখার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। এই দ্বীপ রাষ্ট্রে এরকম বিশেষ কিছু করা হয় না। এই জাতির নীতি এবং বিশ্বাস একই। আমরা প্রতিদিনই আলোচনা করেছি একে অপরের সাথে বড়দিনের কোনো আমেজ বা আদিখ্যেতা বলতে কিছুই দেখছি না। অনেকের ধারণা এখন দেখছেন না ঠিকই, কিন্তু পঁচিশে ডিসেম্বর আসুক। দেখবেন, উৎসব কাকে বলে!

সেই পঁচিশে ডিসেম্বর দেখা গেল উৎসব অনেক বড়, তবে পালন অনেক ছোট। প্রতিদিনের মতই মানুষের জীবনযাপন। উৎসব বলতে দুই সপ্তাহের সরকারি বেসরকারি ছুটি এদের। ছুটি পেয়ে বেশিরভাগ মানুষ ছুটি কাটাচ্ছে নিজেদের মতো করে। ঘুরছে-ফিরছে। পরিবারসহ চলে গেছে এক জায়গা থেকে অন্যজায়গায়। কিন্তু সবাই একান্তে সময় কাটাচ্ছে। নেই কোনো অতি আলোকসজ্জা। আমার হোটেলের একজনের সঙ্গে কথা বললাম। বললাম, আমাদের দেশে আমরা উৎসব ঘিরে অতি আলোকসজ্জা, পটকা, আতশবাজি ইত্যাদি নিয়ে মেতে থাকি কয়েকদিন আগে থেকেই। কিন্তু তোমাদের দেশের এই করুণ চিত্র আমি তো কল্পনাও করিনি! লিয়াম অবাক হলো আমার কথা শুনে। সে বলল, আমরা বড়দিনের ছুটি কাটাচ্ছি, কাজের চাপ থাকবে না, খাবো, হয়তো পান করবো, দূরে গিয়ে কয়েকদিন বেড়িয়ে আসব অথবা পরিবারের সাথে বাড়িতে সুন্দর সময় কাটাব। এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে! আর তোমরা যেটা করো সেটা তোমাদের ঐতিহ্য। তবে দিনের পর দিন ওভাবে আলোকসজ্জা করলে মনে হয় তোমার দেশেরই লস! জানি না তোমরা কতটুকু বিদ্যুৎ উৎপন্ন করো। ওর কথায় ভাবনার যথেষ্ট অবকাশ আছে।

বড়দিন উপলক্ষ্যে আজ সব বন্ধ প্রায়। গতকাল বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার এবং বর্তমানে আন্তর্জাতিক ধারাভাষ্যকার আতহার আলী খান বলছিলেন- মিলটন, অনেক তো হলো। তোমরা রোবট জাতীয় কিছু না কি? এবার চলো, কোথাও ঘুরে আসি। দেবকেও জিজ্ঞাসা করো কাল ফ্রি আছে কিনা? একসাথে চলো যাই কোথাও। এভাবে হোটেলে আর কত!

আমি তাকে বললাম- আপনি বলেছেন, আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা যে আপনার কথা শুনবো না! যে কথা সেই কাজ। আমি দেবকে টেক্সট করলাম। বললাম দাদা, এই হলো ঘটনা। সে বলল, ঠিকই তো। তাহলে কাল শার্প সাড়ে এগারোটায় আমি আর হাসান ভাই আপনাকে আর আতাহার ভাইকে হোটেল থেকে তুলে নিচ্ছি। ও হ্যাঁ, পরিচয় করিয়ে দেই। দেব মানে দেব চৌধুরী। বাংলাদেশের একজন গুণী এবং মেধাবী ক্রীড়া সাংবাদিক। দীর্ঘসময় তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে কাজ করছেন। এখন তিনি অলরাউন্ডার নামে একটি স্বনামধন্য ক্রীড়া বিষয়ক অনলাইন চ্যানেলে কাজ করছেন। বাংলাদেশে এখন স্পোর্টস এরিনায় অনলাইনের জয়জয়কার। বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার এই ক্রিকেট সিরিজের চিত্রই তার প্রমাণ। তিন তিনটি ক্রীড়া বিষয়ক অনলাইন চ্যানেল এই ক্রিকেট সিরিজ কাভার করতে আসলেও টেলিভিশন চ্যানেল মাত্র একটি। অন্যদিকে পত্রিকার কোনো প্রতিনিধি এই সিরিজ উপলক্ষ্যে আসেনি।

যাই হোক, আমি এখানে বসবাসরত সবার প্রিয় আতিকুর রহমান ভাইকেও জানালাম। কারণ, আতিক ভাই প্রতিদিনই আমাকে বলছেন- চলেন আপনাকে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাই। আজ এমনিতেও আতিক ভাইয়ের সাথে ঘুরতে যাওয়ার কথা। তাকেও জানিয়েছিলাম কাল সকাল সাড়ে এগারটায় চলে আসবেন, আমরা বের হচ্ছি। এই ভদ্রলোক সিঙ্গাপুরে ছিলেন পনেরো বছর। নিউজিল্যান্ডে এসেছেন বছরখানেক হলো। অত্যন্ত চুপচাপ, নরম মনের মানুষ। কথাও বলেন খুব কম। কথায় আছে – যে কথা কম বলে তার শত্রুও কম।

সকাল এগারোটায় দেব আমাকে কল করে জানতে চাইলো আমি কতোটুকু তৈরি হয়েছি? আমি তাকে জানালাম, অর্ধেকটা। তবে সাড়ে এগারোটা মোতাবেক আপনি এসে আমাকে পুরো প্রস্তুত পেয়ে যাবেন নিশ্চিত। দেব ফোন কেটে দিল।

আমি হোটেলের নিচে অপেক্ষা করছিলাম। মিনিট তিনেকের মধ্যে এলো দেব। গাড়ির কাচ নামিয়ে আমাকে ডাকল। নিচু হয়ে উঁকি দিলাম ড্রাইভিং সিটের দিকে। হাসান ভাই আমাকে দেখে সালাম দিলেন। আমি উত্তর দিতে দিতে তার পাশের সিটে গিয়ে বসলাম। এই কদিন গাড়িটার এই সিট আমার জন্যই বরাদ্দ থাকে। আমি যেন সামনে বসে সব কিছু ভালোভাবে দেখতে পারি সেজন্য। ব্যাপারটি দেব চৌধুরীর খেয়াল। হাসান ভাইয়ের পুরো নাম মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান। সতের বছর সিঙ্গাপুরে ছিলেন। প্রতিষ্ঠানের কাজে এরই মধ্যে ত্রিশের অধিক দেশে তিনি কাজ করেছেন। বড় কপাল নিয়ে এসেছেন পৃথিবীতে। তার মত বড় মনের মানুষেরই তো এই কপাল থাকবে- এটাই স্বাভাবিক।

নেপিয়ারে বসবাসরত বাঙালিদের সবার প্রিয় হাসান ভাই প্রতিদিনই আমাদের অনেকটা সময় দিচ্ছেন। গত পরশু তিনি আমাদের দাওয়াত করে দুপুরে খাইয়েছেন। বাসার সামনে নিজেদের করা ক্ষেতের ডাটা, টমেটো, কুমড়া শাক নিজেরাই রান্না করেছেন, ক্ষেতের ধনিয়া পাতা ভর্তা করেছেন, সাথে আলু ভর্তা এবং মজার স্বাদের ডাল রান্না। অনেকদিন পর বাসায় রান্না করা খাবার জুটেছে আমাদের। হাসান ভাই এবং সঙ্গে আরও কয়েকজন আছেন- সবাই মিলে রান্না করেছিলেন। এই খাবারের কথা, এই স্বাদের কথা আজীবন মনে থাকবে আমার। আমার হোটেল থেকে দু’তিন মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম আতাহার ভাইয়ের হোটেলের নিচে। ওখানে আতিক ভাই তার গাড়িতে অপেক্ষা করছেন। আমি কল করলাম আতাহার ভাইকে। সামনে এসে ফোন কেটে দিয়ে বললেন- সামনেই তো আছি। মজার মানুষ আতহার ভাই। আমার দেখা বাংলাদেশের সবচেয়ে ড্যাশিং এবং হ্যান্ডসাম মানুষ।

দুই গাড়িতে আমরা ভাগাভাগি করে বেরিয়ে পড়লাম। গন্তব্য টে মাটা পিক। এটি নেপিয়ারের সবচেয়ে উঁচু একটি জায়গা। সম্পূর্ণ নেপিয়ার সিটি এই পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে দেখা যায়। বড়দিনে পুরো নেপিয়ার মৃত্যুপুরীর মত নিস্তব্ধ হয়ে আছে। প্যাসিফিক ওশান ঘেঁষা মেরিন প্যারেড রোড দিয়ে আমরা চলেছি। ইচ্ছা থাকলেও স্পীড লিমিট ষাটের উপরে ওঠানো যাবে না। নিয়ম ভঙ্গ হবে। তাতেও অসুবিধা নেই। বাঁ পাশে গভীর নীল প্যাসিফিক ফেলে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। সাগর পেছনে ফেলে আমরা অন্য রাস্তায় টার্ন করতেই আরও চোখজুড়ানো সৌন্দর্যে বিমোহিত হতে থাকলাম। কখনো রাস্তার দুই পাশে বড় বড় আপেল বাগান। আবার কখনো একপাশে আপেল, ঠিক তার উলটো দিকে বিস্তৃত আঙ্গুর ক্ষেত। নয়নাভিরাম সে দৃশ্য। আপেল বাগান আর আঙ্গুর ক্ষেত নিয়ে আমরা আলোচনা করছিলাম। হঠাৎ দেব আমাকে থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলো- ভাই, আপনার কাছে আমার একটা প্রশ্ন, জাস্ট জানার জন্য। আমি বললাম বলেন। দেব জানতে চাইলো- আপনি আপেলের বেলায় আপেল বাগান বললেন, আর আঙ্গুরের বেলায় ক্ষেত বললেন। কেন ভাই? আঙ্গুর কি দোষ করেছে? আঙ্গুর বাগান বললে অসুবিধা কি?

এটা আবার কেমন প্রশ্ন করলেন দেব? আমার জানামতে, লতা বা গুল্মজাতীয় গাছের বেলায় ক্ষেত শব্দ ব্যবহার করা হয়, আর শক্ত ডালপালা আছে এমন গাছের বেলায় বাগান বলি। দেব বলল, আচ্ছা বুঝলাম। অবশ্য অন্য একজনের কাছে শুনেছিলাম স্বল্প মেয়াদী (৩-৪ মাস থেকে সর্বোচ্চ ১ বছর) ফসলি জমিকে ক্ষেত বলা হয়ে থাকে। আমরা মাঝে মাঝে এসব বাগান আর ক্ষেতের ছবিও তুললাম গাড়ি থামিয়ে। বাগানের প্রতিটি গাছে অসংখ্য ছোট ছোট আপেল ধরেছে। জেনেছি আপেল ধীরে বড় হয়। তাই এগুলো বড় হতেও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। শত শত একর জুড়ে আঙ্গুরের ক্ষেত বিশেষভাবে মাচা দিয়ে রাখা হয়েছে। তাতে থোকায় থোকায় সবুজ আঙ্গুর ঝুলে আছে। কি যে সুন্দর সে দৃশ্য না দেখলে বোঝানো যাবে না। চোখ ভরে আমরা দেখে নিলাম সেই সুন্দর!

গাড়ি ছুটছে আবার। একটু সুযোগ পেলেই হাসান ভাই স্পীড বাড়িয়ে দিচ্ছে। যেখানে ক্যামেরা নেই অথবা টহল পলিশের থাকার সম্ভাবনা নেই। হাসান ভাই ডানদিকে ইশারা করে দেখতে বললেন। হাঁটু সমান বড় বড় নেপিয়ার ঘাসের মধ্যে নাক ডুবিয়ে নিশ্চিন্তে ঘাস খেয়ে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ডের গরুগুলো। একেকটা গরুর ওজন নাকি সাতশ থেকে আটশ কেজি। ভাবা যায়! এসব গরুর নাম-গল্পই শুধু শুনেছি এতকাল। ছোটবেলায় গুঁড়া দুধের বিজ্ঞাপনে এসব গরুর ছবি দেখেছি। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন করে নিউজিল্যান্ড। ত্রিশ মিনিটের মধ্যে আমরা পৌঁছে গেলাম টে মাটা পিকে। গাড়ি পার্ক করে আমরা খানিক হেঁটে আরও উপরে উঠলাম। ভেবেছিলাম আজ লোকজন দেখব না, শুধু আমরা। কিন্তু কিসের কি। বেশ ভালো পরিমাণ লোকজনের উপস্থিতি দেখা গেলো সেখানে। অবশ্য নিউজিল্যান্ডবাসী তেমন কাউকে দেখেছি বলে মনে হয় না। মালয়েশিয়ান, চায়না, ফিজি, ইন্ডিয়ান, শ্রীলঙ্কান আর আমরা বাংলাদেশিরাই সেখানে গিয়েছিলাম।

একটু বলে নিই, টে মাটা পিক নেপিয়ারের হাস্তিংসে অবস্থিত। এটি নেপিয়ারের সবচাইতে উঁচু জায়গা। উচ্চতায় তিনশ নিরানব্বই মিটার। এখানে গাড়ি করে যাওয়া যায়। এ ছাড়াও যারা ট্র্যাকিং করতে পছন্দ করেন তারা যান। হঠাৎ দেখি আতাহার ভাই ওইইই উপরে কাদের যেন ছবি তুলে দিচ্ছেন। আরে, কখন গেলেন তিনি অত উপরে! সেলফি তুলছেন। আবার অন্যদেরও ছবি তুলে দিচ্ছেন। বাহ, কি দারুণ স্ট্যামিনা লোকটার। আমিও উপরের দিকে উঠে গেলাম। আসতে আসতে দেব, হাসান ভাই আর আতিক ভাইও উঠলেন। আতাহার ভাই সৌন্দর্যে আত্মহারা একেবারে। এই জীবনে উনি বহুদেশে ঘুরেছেন। খেলোয়াড়ি জীবনেও, আবার এখন বাংলাদেশের খেলা হলেই সব দেশেই তার উপস্থিতি থাকবেই। তার কাছেই জানতে চাইলাম- বড় ভাই, এই জীবনে অনেক দেশ ঘুরেছেন। আমারও সৌভাগ্য হয়েছে আপনার সঙ্গী হওয়ার কয়েকটি দেশে। সৌন্দর্যের ব্যাপারে নিউজিল্যান্ডকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

আতহার ভাই উপরের দিকে হাত উঁচিয়ে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিলেন। আমাকে আর দেবকে বললেন- চেয়ে দেখো তোমরা। উফ, কি সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছেন উপরওয়ালা। নিউজিল্যান্ড সেরা, সত্যিই সেরা। দেবকে বললাম, যতদূর জানি এবার নিয়ে আপনি চতুর্থবার এ দেশে এসেছেন। কেমন নিউজিল্যান্ড? দেব চৌধুরী বললেন, আতহার ভাইয়ের সঙ্গে আমি একমত। সৌন্দর্যের বিচারে নিউজিল্যান্ড এককথায় পৃথিবীর সেরা। আমরা অজস্র ছবি তুললাম- কখনো সেলফি, কখনো দুইজ, কখনো চারজন। আবার কখনো সবাই মিলে গ্রুপ ছবি। টে মাটা পিক থেকে পুরো নেপিয়ার চোখে ধরা পড়ে। একপাশে দূরে নীল জলরাশির প্যাসিফিক সাগর। একপাশে অতি ক্ষুদ্র ঘরবাড়ি। আর শত শত সবুজ সুন্দর পাহাড়। কোথাও কম, কোথাও একটু বেশি আবার কোথাও অনেক উঁচু সেসব পাহাড়। চারপাশে যতদূর দৃষ্টি যায় সৃষ্টির বিস্ময়ে প্রশান্তিতে মাথা নত হয়ে আসে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ