জেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম :নতুন বছরে নতুন হিসাবের খাতা খোলেন ব্যবসায়ীরা। ১২ মাস বেচাকেনা পর বাকির টাকা তুলতে বছর শেষে এই আয়োজন করেন তারা। এইবার এই হালখাতা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়িয়ে জায়গা করে নিচ্ছে ব্যক্তিগত সম্পর্কেও। হালখাতার মাধ্যমে ধার দেওয়া টাকা তোলার নতুন ধারণা সৃষ্টি করেছেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় এম.এ. এম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল আউয়াল।
ইতোমধ্যে দেনাদারদের কাছে হালখাতার চিঠি পৌঁছে দিয়েছেন আব্দুল আউয়াল। আগামী ১২ জানুয়ারি হালখাতার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এরকম একটা চিঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ধারের টাকা ফেরত পেতে হালখাতা আয়োজনে করায় আব্দুল আউয়ালকে নিয়ে চলছে আলোচনা।
চিঠিতে আব্দুল আউয়াল দেনাদারদের নুতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আপনাকে টাকা হাওলাত দিতে পারায় আমি আনন্দিত। সে মতে উক্ত হাওলাতি টাকা উত্তোলনের লক্ষ্য আগামী ১২ জানুয়ারি শুক্রবার হালখাতার আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত হালখাতায় আপনি উপস্থিত হয়ে ঋণ পরিশোধ করে ঋণ মুক্ত থাকুন।’ এই ঋণ পরিশোধের হালখাতায় ৩৫জন দেনাদারদকে চিঠি দিয়েছেন আব্দুল আউয়াল নামের এই শিক্ষক। এসব দেনদারদের মধ্যে বেশির ভাগই ওই শিক্ষকের বন্ধু ও আত্বীয়-স্বজন।
চিঠি পাওয়া কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা হালখাতার চিঠি পেয়ে প্রথমে হতভম্ব হলেও পরে বুঝতে পেরেছি ধারের টাকা ফেরত দিতে দেরি হয়েছে। আশা করছি হালখাতায় তার টাকা পরিশোধ করে দেব।
শিক্ষক আব্দুল আউয়াল বলেন, তিন বছর ধরে বন্ধু ও নিকট স্বজনরা বিভিন্ন সময়ে আমার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছেন। এদের সঙ্গে প্রতিদিন উঠাবসা রয়েছে। লজ্জায় তাদের কাছে টাকা ফেরত চাইতে পারিনি। তারাও টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে কিছু বলেন না। পরে তাদেরকে টাকা ফেরত দেওয়ার মাধ্যম হিসেবে হালখাতার ধারণা মাথায় আসে। এতে তাদের সঙ্গে মনমালিন্যও হবে না আবার টাকা উঠার সম্ভাবন শতভাগ রয়েছে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৩৫জনকে চিঠি দিয়েছি। এদের মধ্যে কেউ তিন বছর আগে টাকা নিয়েছেন। সব মিলিয়ে ৩ লাখ টাকার মতো ধার দেওয়া আছে। চিঠি পেয়ে অনেকে টাকা পরিশোধ করতে আগ্রহ দেখিয়েছেন।