জেলা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম : ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত হয় বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী। বহুল আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছর আজ। একযুগ পার হলেও নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার পায়নি পরিবার।
২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারে বিএসএফের বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে খালাস দেন আদালত। পরে বিজিবির আপত্তিতে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনর্বিচার শুরু হলে সেখানেও খালাস দেওয়া হয় অভিযুক্তকে।
২০১৫ সালের ১৪ জুলাই ভারতীয় মানবাধিকার সুরক্ষার (মাসুম) মাধ্যমে ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করেন। পিটিশনের ভিত্তিতে কয়েক দফায় শুনানির দিন পেছালেও এখনো আদালতে ঝুলে আছে পিটিশনটি। এ অবস্থায় হতাশার মধ্যে থাকলেও মেয়ের হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তিসহ ন্যায় বিচারের আশায় তার পরিবার।
ফেলানীর ছোট ভাই জাহান উদ্দিন বলেন, ১৩ বছর হয়ে গেল বোন হত্যার বিচার পাইলাম না। ফেলানী আপা আমাদের যে কত আদর করত, ভুলতেই পারি না। যার বোন হারিয়েছে, শুধু সেই বুঝবে বোন হারানোর কষ্ট। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, আমার বোনকে যারা হত্যা করেছে তার যেন সঠিক বিচার হয়।
ফেলানীর মা জাহানারা বেগম বলেন, মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মানবাধিকার সংস্থাসহ বহু জনের কাছে গিয়েছি। কিন্তু ১৩ বছরেও বিচার পেলাম না।
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, দুই বার কোচবিহার গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছি। বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের নৃশংসতার বর্ণনা দিয়েছি। তারপরও ন্যায্য বিচার পাইনি। ন্যায্য বিচার পাওয়ার জন্য ভারতের সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন দাখিল করেছি। শুনানি হচ্ছে না। তারপরও আশা ছাড়িনি। প্রতীক্ষায় আছি। যতদিন ন্যায্য বিচার পাব না, ততদিন বিচার চাইতে থাকবো।
কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর ও ফেলানীর বাবার আইনি সহায়তাকারী অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন বলেন, সীমান্তে হত্যার শিকার ফেলানীর মামলার শুনানি হওয়া দরকার। শুনানি হলে ঝুলে থাকা বিষয়টি নিষ্পত্তি হতো। যেহেতু দুই রাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। শান্তিপূর্ণ বর্ডারের জন্য নিশ্চয়ই ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট কিছু নির্দেশনা দিবেন। পাশাপাশি ফেলানীর পরিবার ক্ষতিপূরণ পাক এটাই চাওয়া।