জেলা প্রতিনিধি, মাদারীপুর : তুচ্ছ ঘটনায় মাদারীপুরে দুইপক্ষের সংঘর্ষে ১২ পুলিশসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছে। এ সময় অর্ধশত ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় পৌরসভার কাউন্সিলরসহ সাত জন আটক করা হয়েছে।

মাদারীপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের চরখাগদী এলাকায় বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাত ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে।

আহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে মাদারীপুর সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. সেলিম সরদার, এসআই রবিউল ইসলাম, এএসআই মাসুদ বেপারী, কনস্টেবল মনোয়ার হোসেন রয়েছেন।

ভুক্তভোগীরা জানায়, চারখাগদী এলাকার সোহরাব বেপারীর ছেলে সীমান্ত বেপারী বুধবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মোটরসাইকেল নিয়ে চরমুগরিয়া বাজারে যাচ্ছিল। তার মোটরসাইকেলে একই এলাকার মিন্টু মৃধার ছেলে আশিক মৃধার ধাক্কা লাগে।

এ ঘটনার বিরোধ মিটাতে দুই পক্ষের লোকজন চরমুগরিয়া বাজারের দুলাল তালুকদারের দোকানে সালিশে বসে। সালিশে দুইপক্ষ বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে সুলতান সরদার নামে একজনের মাথায় আঘাত লাগে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সরদার, মৃধা ও বেপারী বংশের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

রাত ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত টানা আড়াই ঘণ্টার সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। উভয়পক্ষের অন্তত ১০টি বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। সংঘর্ষে থানা পুলিশের পরিদর্শক সেলিম সরদারসহ ১২ পুলিশ সদস্য আহত হয়। এ ছাড়া উভয়পক্ষের ২৩ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।

ভুক্তভোগী এক নারী বলেন, ‘হঠাৎ করে শুনি মারামারি লেগেছে। আমাদের ঘরের পুরুষ লোক দেশের বাহিরে থাকে। ঘরের থাই গ্লাসগুলো ভেঙে চুরমার করেছে।’ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এমন ঘটনায় সংঘর্ষ হলে তারা কীভাবে বসবাস করবেন।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. সেলিম সরদার জানান, সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ঠিক তখনই পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে দুইপক্ষই। এতে পুলিশের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে হয়েছে।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি এএইচএস সালাউদ্দিন জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় মাদারীপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল বাশার বেপারীসহ সাত জনকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। যারা সরাসরি এ ঘটনায় জড়িত ছিল সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।