আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের ওপর আবার যৌথ বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। সোমবার (২২ জানুয়ারি) রাতে এ হামলা চালায় মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, হুতি গোষ্ঠীর ওপর এ হামলায় আটটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। যার মধ্যে একটি ভূগর্ভস্থ স্টোরেজ সাইট এবং হুতি ক্ষেপণাস্ত্র ও নজরদারি সক্ষমতাও রয়েছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে গত কয়েক মাস ধরে ইরান-সমর্থিত হুতিরা লোহিত সাগরে ইসরায়েল ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়ায় চলতি মাসের শুরুর দিকে হুতিদের ওপর হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য।
ইয়েমেনের বেশিরভাগ অংশ নিয়ন্ত্রণকারী হুতিদের লক্ষ্যবস্তুতে যুক্তরাষ্ট্রের এটি অষ্টম হামলা। আর গত ১১ জানুয়ারি যৌথ হামলা চালানোর পর এটি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে দ্বিতীয় যৌথ অভিযান।
ছয়টি দেশের স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ হামলায়, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা এবং নেদারল্যান্ডসের সমর্থনে মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী ইয়েমেনের আটটি ভিন্ন স্থানে সোমবার হামলা চালিয়েছে।
মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস আইজেনহাওয়ারের যুদ্ধবিমানগুলো সোমবারের হামলায় যুক্ত ছিল। আর চারটি আরএএফ টাইফুন যুদ্ধবিমান সোমবারের হামলায় অংশ নিয়েছে বলে যুক্তরাজ্য জানিয়েছে। অন্যদিকে হুথি-চালিত আল মাসিরাহ টিভি ইয়েমেনের সানা, তাইজ এবং বায়দা প্রদেশে হামলার খবর দিয়েছে, যার মধ্যে রাজধানীর কাছে অবস্থিত আল-দাইলামি বিমানঘাঁটিও রয়েছে।
মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, হামলার কারণে হুতিদের জটিল হামলা চালানোর ক্ষমতা কমে গেছে। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত হুতিদের ধ্বংস হওয়া ক্ষেপণাস্ত্র, রাডার, ড্রোন বা অন্যান্য সামরিক সক্ষমতার সংখ্যা সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান দিতে অস্বীকার করেছে।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস এক বিবৃতিতে বলেছেন, সর্বশেষ হামলাটি আত্মরক্ষায় করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই হামলা হুতিদের সীমিত মজুদ ও বৈশ্বিক বাণিজ্যের হুমকি দেওয়ার ক্ষমতার ওপর আরেকটি ধাক্কা দেবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত সপ্তাহে সতর্ক করে বলেছিলেন, হুতিরা বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক ও সামরিক জাহাজে আক্রমণ বন্ধ না করলে ইয়েমেনে বিমান হামলা অব্যাহত থাকবে।
গত সপ্তাহে হুতিরা লোহিত সাগরে মার্কিন মালিকানাধীন একটি ট্যাঙ্কার জাহাজ লক্ষ্য করে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল। তবে ক্ষেপণাস্ত্র দুটি জাহাজের কাছাকাছি এসে বিধ্বস্ত হওয়ায় কোনো ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।
হুতি গোষ্ঠী বলেছে, গাজায় ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েল হামলা বন্ধ না করা পর্যন্ত তারা লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা চালিয়ে যাবে।