নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রণীত সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’ অধ্যায়ের ‘শরীফার গল্প’ আরও গভীরভাবে পর্যালোচনার জন্য পাঁচ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রশীদকে। এ কমিটি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে (এনিসিটিবি) গল্প পর্যালোচনায় সহায়তা করবে।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞতিতে বলা হয়েছে, নতুন কারিকুলামে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’ অধ্যায়ের শরীফা শিরোনামে গল্প নিয়ে উদ্ভূত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত বিষয়ে আরও গভীরভাবে পর্যালোচনা করে এনিসিটিবিকে সহায়তা করার জন্যে পাঁচ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর মুফতি মাওলানা কফিল উদ্দীন সরকার, এনসিটিবি‘র সদস্য মশিউজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক এবং ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ।
আলোচিত শরীফার গল্পে থার্ড জেন্ডারদের গল্প বলা হলেও দেশের রক্ষণশীল সমাজ দাবি করছে, এর উপস্থাপনায় ট্রান্সজেন্ডার বা সমকামী ও রূপান্তরকামীদের বিষয় টানা হয়েছে। এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন-প্রতিবাদ করা হচ্ছে। বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক একটি সেমিনারে বইয়ে ট্রান্ডজেন্ডারদের কথা বলা হয়েছে দাবি করে গল্পের অংশের পাঁতাটি ছিড়ে ফেলেন। সবাইকে একই কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। এ ঘটনায় তাকে ক্লাস থেকে বিরত রাখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর পরেই ইস্যুটি নতুন করে আলোচনায় আসে।
এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘যখন আলোচনা করেছি, তখন দেখেছি, শব্দটা ট্রান্সজেন্ডার নয়, থার্ড জেন্ডার। সেটা তো আইনত স্বীকৃত। তৃতীয় লিঙ্গ যারা সমাজে হিজড়া নামে পরিচিত। তারা দেশের নাগরিক। তাদের নাগরিক অধিকার রয়েছে। তবে, গল্প উপস্থাপনের ক্ষেত্রে যদি এমনভাবে উপস্থাপন হয়ে থাকে, বিভ্রান্তি এবং বিতর্ক সৃষ্টির প্রয়াস থেকে থাকে, তাহলে এ গল্পের উপস্থাপনের পদ্ধতিটা পরিবর্তন করা যায় কি না, এ বিষয়ে আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করব।’