আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ডিসপোজেবল ভ্যাপ বা একক ব্যবহারের ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দেশটিতে অল্প বয়সী কিশোরদের মধ্যে ভ্যাপিং আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।
সোমবার (২৮ জানুয়ারি) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক আজ সোমবার ডিসপোজেবল ভ্যাপ বিক্রি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন এবং তরুণ প্রজন্মকে তামাক কেনা থেকে বিরত রাখার জন্য একটি আইন প্রবর্তনে সরকারের অভিপ্রায় পুনর্ব্যক্ত করবেন।
নতুন নিয়মের অধীনে, ভ্যাপ ফ্লেভারের ওপর বিধিনিষেধ থাকবে। প্লেইন প্যাকেজিংয়ের পাশাপাশি ও ভ্যাপ বা ই-সিগারেটগুলো শিশুদের কাছে কম আকর্ষণীয় করার জন্য দোকানগুলোতে কীভাবে প্রদর্শিত হবে, সে বিষয়ে পরিবর্তন আনা হবে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এ বছর ১৫ বছর বয়সী বা তার চেয়ে কম বয়সী শিশুদের কাছে সিগারেট বিক্রি আইনত বন্ধ করার জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি, ডিসপোজেবল ভ্যাপের বিরুদ্ধে নতুন পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদে আমাদের শিশুদের স্বাস্থ্য রক্ষা করে দীর্ঘস্থায়ী প্রজন্ম তৈরি করবে।’
যুক্তরাজ্য সরকারের মতে, দেশটিতে ধূমপান হলো সবচেয়ে বড় প্রতিরোধযোগ্য ঘাতক, যার ফলে ক্যানসারজনিত চারজনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়, বা বছরে প্রায় ৮০ হাজার মানুষের প্রাণহাণি ঘটে।
গত বছরের অক্টোবরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক একটি আইন পাস করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ওই আইনে বলা হয়, যে কেউ ১ জানুয়ারি ২০০৯ বা তার পরে জন্মগ্রহণ করলে, তারা তাদের জীবদ্দশায় সিগারেট কিংবা অন্য কোনো তামাকজাত পণ্য কিনতে পারবেন না।
ভ্যাপ বা ই-সিগারেটকে যদিও মানুষজনের ধূমপান ত্যাগ করতে সাহায্য করার চাবিকাঠি হিসাবে দেখা হয়, তবে এটি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে যে, ভ্যাপিং পণ্য তরুণদের মধ্যে নিকোটিন আসক্তির কারণ হতে পারে। যুক্তরাজ্য সরকারের তথ্যমতে, দেশটিতে ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ৯ শতাংশ ভ্যাপিং পণ্য ব্যবহার করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ডিসেম্বরে বলেছিল, সব ধরনের ভ্যাপ ফ্লেভার নিষিদ্ধ করা উচিত।
এদিকে, ই-সিগারেট ইন্ডাস্ট্রি এবং ইউকে ভ্যাপিং ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন যুক্তি হলো, ভ্যাপ তামাকের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে এবং ধূমপায়ীদের পরিবর্তনে উৎসাহিত করতে ফ্লেভার গুরুত্বপূর্ণ।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদে আমাদের দেশের জন্য যা সঠিক বলে মনে করি তা করার জন্য আমার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই আমি ডিসপোজেবল ভ্যাপ নিষিদ্ধ করার জন্য সাহসী পদক্ষেপ নিচ্ছি। ভ্যাপিং ফ্লেভার সীমিত করতে, প্লেইন প্যাকেজিং চালু করতে এবং দোকানে ভ্যাপগুলো কীভাবে প্রদর্শিত হবে, তা পরিবর্তন করার জন্য নতুন একটি পরিকল্পনা আনছি।’
যুক্তরাজ্য সরকার বলছে, স্বাস্থ্য সুবিধার পাশাপাশি, ডিসপোজেবল ভ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা পরিবেশ রক্ষায় সহায়ক হবে।