নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৫৭২ কোটি ৪৩ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। একক মাস হিসেবে রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে তা নতুন রেকর্ড।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ইপিবি’র তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে ৫৭২ কোটি ৪৩ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার। এর আগে এক মাস হিসেবে সর্বোচ্চ রপ্তানি হয়েছিল গত ডিসেম্বরে, ৫৩৬ কোটি ৫২ লাখ ডলার।
গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল। ওই সময় প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলার। ইপিবির তথ্য বলছে, রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে (জুলাই-জানুয়ারি) পর্যন্ত সাত মাসে পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৩ হাজার ৩২৬ কোটি ডলার। এই রপ্তানি আয় গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের তুলনায় ২ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি। তবে, তা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ কম। অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল ৩ হাজার ৫৮৭ কোটি ডলার।
ইপিবি’র প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে তৈরি পোশাক ছাড়া অধিকাংশ পণ্যের রপ্তানি কমেছে। এসবের মধ্যে আছে—হিমায়িত খাদ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, চমড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্রকৌশল পণ্য ইত্যাদি।
ইপিবি‘র তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক থেকে প্রথম ৭ মাসে ২ হাজার ৮৩৬ কোটি ডলার আয় হয়েছে। তা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি, তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ দশমকি ২৩ শতাংশ কম। সাত মাসে পোশাক রপ্তানির আয়ের লক্ষ্য ছিল ৩ হাজার ২৪ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে নিট পোশাকের রপ্তানি ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ বেড়েছে। তবে, ওভেন পোশাক রপ্তানি কমেছে ২ দশমিক ২০ শতাংশ।
পোশাকের রপ্তানির ওপর ভর করে রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় আছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেছেন, রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র আনার কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও ভালো করছে বাংলাদেশ। এখন আমরা নতুন নতুন বাজার খুঁজছি। আশা করছি, আগামী দিনগুলোতেও রপ্তানির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে।
তৈরি পোশাকের বাইরে রপ্তানি তালিকার শীর্ষে থাকা পণ্যে রপ্তানি কমেছে গত সাত মাসে। গত জুলাই থেকে জানুয়ারি সময়ে পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কম হয়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ।
এছাড়া, হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি কমেছে ৩৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আরও অনেক পণ্যের রপ্তানিই কমার প্রবণতার মধ্যে আছে। অবশ্য কৃষিপণ্যের রপ্তানি চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়েছে এবং প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি ১৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়েছে।