জেলা প্রতিনিধি, বান্দরবান : মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘাত থামছেই না। দুই বাহিনীর ছোড়া গোলাগুলি ও মর্টারশেল বাংলাদেশ অভ্যন্তরে এসে পড়ছে। সেই গুলি ও মর্টারশেলের আঘাতে বাংলাদেশি নারীসহ নিহত হয়েছেন দুইজন। এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচ জন। ফলে ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে এ আশঙ্কায় সীমান্ত এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরের পর থেকে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঘুমধুম ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়শিবির ঘোষণা করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা থেকে থেমে থেমে মিয়ানমারের ভেতরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে দেশটির সরকারি বাহিনীর সংঘাত চলছে। গুলি ও মর্টারশেল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে ঘরবাড়িতে পড়ছে। মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলের আঘাতে ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী এলাকার হোসনে আরাসহ দুইজন নিহত হওয়ার পর আতঙ্ক আরও বেড়েছে। শতাধিক পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, বান্দরবান জেলা প্রশাসক এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজের নির্দেশে স্থানীয় লোকজনকে সরে যেতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশপারি তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া থেকে ২০ পরিবার, ভাজাবনিয়া তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া থেকে ৩০ পরিবার, তুমব্রু কোণার পাড়া থেকে ৩০ পরিবার, ঘুমধুম পূর্বপাড়া থেকে ২০ পরিবার, তুমব্রু হিন্দু পাড়া থেকে ১০ পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে পাশের কক্সবাজারের উখিয়া, মরিচা, কোট বাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় নিরাপদ আশ্রয়ে আত্মীয়দের বাড়িতে চলে গেছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, সীমান্ত পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে এ আশঙ্কায় ঘুমধুম ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জনগণের জন্য আশ্রয়শিবির হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সীমান্তঘেঁষা লোকজনকে সেখানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।