জেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ : গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বোনের শ্বশুর মারা গেছেন। আজ শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজের পর ছিল জানাজা। বোনের শ্বশুরকে শেষ বারের মতো দেখতে ও জানাজায় অংশ নিতে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বাবুল আহমেদ যাচ্ছিলেন সদর উপজেলার চরঈশ্বরদীয়া গ্রামে। কিন্ত সেখানে পৌঁছানোর আগেই মারা গেলেন তারা।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আলালপুরে ময়মনসিংহ-শেরপুর সড়কে বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৭ জনের মধ্যে একই পরিবারের তিনজন রয়েছেন। নিহতরা হলেন- জেলার ফুলপুর উপজেলার রামভদ্রপুরের আশাবট গ্রামের বাবলু আহমেদ (৪৫), তার স্ত্রী শিলা আক্তার (৩৫) এবং এই দম্পতির সাত বছরের ছেলে মো.সাদমান।
বাবলু আহমেদের স্বজন ফুলপুর পৌরসভার কাউন্সিলর কছিমউদ্দিন বলেন, বাবলু ফুলপুর বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। আর চার ছেলে-মেয়ে রয়েছে। শুক্রবার সকালে বোনের শ্বশুরের জানাজায় অংশ নিতে ছোট ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে রওনা হন বাবুল। কিন্তু, আলালপুরে বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে সবাই মারা গেছেন। বাড়িতে তার আরও দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। এই পরিবারে হাল ধরার মতো আর কেউ রইলো না। বিষয়টি কোনভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার আলালপুর এলাকায় বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় সাত জন নিহত হন। তাদের মধ্যে চার জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহত অপরজন হলেন- সিএনজি অটোরিকশা চালক আলামিন হোসেন (২৫)। তার বাড়ি ফুলপুর উপজেলার দিও গ্রামে।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, আলালপুর নামক স্থানে ঢাকা থেকে শেরপুরগামী আদিল পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সিএনজির চালকসহ সাতজন নিহত হয়। নিহত ৭ জনের তিন একই পরিবারের সদস্য। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মরদেহ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়েছে।
ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক দিদারে মোহাম্মদ মাকসুদ আলম চৌধুরী বলেন, নিহতদের দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। ঘটনার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।