নিজস্ব প্রতিবেদক : নিজস্ব কারখানায় উন্নত প্রযুক্তি ও অ্যাডভান্সড মেশিনারিজের সমন্বয়ে জাপানি স্ট্যান্ডার্ডে ব্যাটারি উৎপাদন করছে ওয়ালটন মাইক্রো-টেক করপোরেশন। পণ্য নিয়ে চালাচ্ছে নিয়মিত গবেষণা। বর্তমানে মোটরসাইকেলের ব্যাটারি, রিচার্জেবল ফ্যান, অনলাইন ইউপিএস ও এমার্জেন্সি লাইটসহ বিভিন্ন ডিভাইসের ব্যাটারি উৎপাদন ও বাজারজাত করছে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি বছরের মধ্যেই সিএনজি অটোরিকশা এবং প্রাইভেট কারে ব্যবহারযোগ্য ব্যাটারি বাজারে ছাড়বে ওয়ালটন। এছাড়া, বাস, ট্রাক ও রিকশায় ব্যবহারযোগ্য ব্যাটারিও আগামী বছরে বাজারে ছাড়া হবে।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হেড কোয়ার্টার্সে ‘ওয়ালটন ব্যাটারি পাওয়ার ফিয়েস্টা-২০২৪’ অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান ওয়ালটন মাইক্রো-টেকের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) নিশাত তাসনিম শুচি।
তিনি বলেন, দেশেই নিজস্ব কারখানায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে আন্তর্জাতিক মানের ব্যাটারি তৈরি করে সাশ্রয়ী মূল্যে বাজারজাত করছে ওয়ালটন। সিএনজি অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, বাস ও ট্রাকের জন্য অটোমোটিভ ব্যাটারিসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যাটারি ধাপে ধাপে ওয়ালটন ব্যাটারির প্রোডাকশন লাইনে যুক্ত হচ্ছে।
দেশব্যাপী ওয়ালটন ব্যাটারির বিক্রয় কার্যক্রম আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে সম্মেলনে উপস্থিত পরিবেশকদের গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেন তিনি।
এর আগে সকালে মাইক্রো-টেক করপোরেশনের হেড কোয়ার্টার্সে বেলুন উড়িয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নিশাত তাসনিম শুচি। উদ্বোধনের পর ওয়ালটন ব্যাটারির স্টেকহোল্ডার ও পরিবেশকরা হেড কোয়ার্টার্সের বিভিন্ন প্রোডাক্ট লাইন পরিদর্শন করেন।
পাওয়ার ফিয়েস্টা অনুষ্ঠানে ওয়ালটন ব্যাটারির নতুন একটি সিরিজ ‘স্কাইভোল্টজ’ উন্মোচন করা হয়। এই সিরিজের মধ্যে আছে নতুন সাত মডেলের ব্যাটারি, যা রিচার্জেবল ফ্যান, ওয়েইটস্কেল, খেলনা গাড়ি, এমার্জেন্সি লাইট, কম্পিউটার ইউপিএস এবং লিফট অটোমেটিক রেসকিউ ডিভাইসে (এআরডি) ব্যবহার করা যাবে।
অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন—ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম, ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস এম মাহবুবুল আলম, ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এস এম রেজাউল আলম ও ওয়ালটন হাই-টেকের পরিচালক রাইসা সিগমা হিমা।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন—ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইউসুফ আলী, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাহিনুর সুলতানা রেখা, ওয়ালটন ব্যাটারির চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) মাহফুজুর রহমান এবং ওয়ালটন ব্যাটারির হেড অব সেলস বাবর আলী প্রমুখ।
২০১৫ সালে সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ব্যাটারি উৎপাদন শুরু করে ওয়ালটন মাইক্রো-টেক করপোরেশন। বর্তমানে মোট ১৬ মডেলের স্মল ব্যাটারি, ১৫ মডেলের মোটরসাইকেল ব্যাটারি এবং ৯ মডেলের অনলাইন ইউপিএস ব্যাটারি উৎপাদন ও বাজারজাত করছে ওয়ালটন। এসব ব্যাটারি উৎপাদনে প্রতিনিয়ত শতভাগ বিশুদ্ধ সীসাসহ অন্যান্য টেকসই কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়। ব্যাটারি উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও উন্নত মানের প্রযুক্তি, যা ব্যাটারিকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ওয়ালটন ব্যাটারির স্টেকহোল্ডার ও পরিবেশকদের ওয়ালটনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন ওয়ালটন হাই-টেকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস এম মাহবুবুল আলম। স্টেকহোল্ডার ও পরিবেশকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের সহযোগিতায় দেশব্যাপী ওয়ালটন ব্যাটারির সেলস গ্রোথ বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে। আপনারা এভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রাখলে অন্যান্য পণ্যের মতো ব্যাটারি প্রোডাক্টেও শীর্ষ মার্কেট শেয়ার হবে ওয়ালটনের।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ওয়ালটন ব্যাটারির স্টেকহোল্ডার ও পরিবেশকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এস এম শামসুল আলম বলেন, ওয়ালটন বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান। আপনারা ওয়ালটন পরিবারের গর্বিত সদস্য। আপনাদের হাতে ওয়ালটন সর্বদা উচ্চ প্রযুক্তির আন্তর্জাতিক মানের ব্যাটারি তুলে দেওয়ায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সিবিও মাহফুজুর রহমান বলেন, ওয়ালটন মাইক্রো-টেক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে দেশে সফলভাবে ব্যবসা করছে। পাশাপাশি উন্নত মানের প্রোডাক্ট সরবরাহ করে মানুষের মনে আস্থা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে ওয়ালটন। এতে সহায়ক শক্তি ও ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে কাজ করছেন ডিস্ট্রিবিউর ও ডিলারবৃন্দ। সফলতার এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।
অনুষ্ঠানে নিত্য নতুন ডিজাইনের ব্যাটারি উৎপাদন প্রক্রিয়া, ওয়ালটন ব্যাটারির ফিচার ও গুণগত মান নিয়ে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন ওয়ালটন ব্যাটারির রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন (আরঅ্যান্ডআই) বিভাগের কর্মকর্তা প্রকৌশলী নাহিদ আল মাহমুদ। এছাড়া, মার্কেট সম্পর্কিত বিভিন্ন পর্যালোচনা তুলে ধরেন ওয়ালটনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।
উল্লেখ্য, গত বছর ওয়ালটন ব্যাটারির বিক্রয় বৃদ্ধিতে অসামান্য অবদান রাখায় মাইক্রো-টেকের ৬ জন কর্মকর্তা ও ৯ জন পরিবেশককে পুরস্কৃত করা হয়। তারা ভারত, নেপাল ও সৌদিআরব ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া, অনুষ্ঠানে র্যাফেল ড্র এবং ‘গেম শো’র মাধ্যমে ২১ জনকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কৌতুক পরিবেশন করে মঞ্চ মাতান কমেডিয়ান শাওন মজুমদার। ওয়ালটনের নিজস্ব কালচারাল ক্লাবের আয়োজনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ওয়ালটন ব্যাটারির ‘পাওয়ার ফিয়েস্টা-২০২৪’।