মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরের শিবচরে স্কুল থেকে শিক্ষা সফরে যাওয়ার পথে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একত্রে মদপান করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থীরা বিদেশি মদের বোতল থেকে শিক্ষককে মদ ঢেলে দিচ্ছেন, আবার শিক্ষকের সামনেই শিক্ষার্থীরা আনন্দ উল্যাস করে মদপান করছেন এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টিকটকে ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা যায়, গত শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের শিকদার হাট উচ্চবিদ্যালয়ের ১৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ৪১ জন শিক্ষার্থী শিক্ষা সফরে নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও যান। কিন্তু, এই সফরে শিক্ষার্থীদের কোনো অভিভাবককে সঙ্গে নেওয়া হয়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা সফর শেষে এলাকায় ফেরার পর ফেসবুক ও টিকটকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মদ্পানের ভিডিও ছড়িয়ে পরে।
ভিডিওতে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক মো. ওয়ালিদ মদের বোতল হাতে নিয়ে মদ ঢালছেন এবং শিক্ষার্থীদের হাতে মদের বোতল দিচ্ছেন। ওই ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর থেকে অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোসা. জীম আক্তারীর মা বলেন, আমার মেয়েও গিয়েছিলো শিক্ষা সফরে। আমরা যারা বাচ্চাদের অভিভাবক তাদের শিক্ষকরা সঙ্গে নেননি। শিক্ষকদকের সামনেই যদি এমন কর্মকাণ্ড হয় তাহলে আর কিছুই বলার থাকে না।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবির হোসেন বলেন, আমার বন্ধুরা শিক্ষা সফরে গিয়েছিলো। ওরা ফেসবুক স্টোরি দিয়েছে। আমি ভিডিওতে দেখেছি, ওরা মদপান করেছে। ওরা স্যার-ম্যাডামদের সামনেই মদ পান করেছে। মদপান করা অবস্থায় সরোয়ার, রবিউল, মোস্তফা এদের ভিডিও দেখেছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন বলেন, আমার বাড়ি সদরপুর। আমি আগের দিন ঢাকাতে গিয়ে অবস্থান করেছি। শিক্ষা সফরে আমি যোগ দিয়েছি ঢাকা থেকে। এর আগে বাসের মধ্যে কি হয়েছে তা আমি জানি না। দায়িত্বে ছিলেন শিউলি ম্যাডাম। আমি বাসে ওঠার পর এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খাঁন বলেন, শিক্ষা সফরের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। শিক্ষক শিক্ষার্থীরা মদ খেয়ে নেচেছে বিষয়টি শুনেছি ও ভিডিও দেখেছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার খন্দকার মাকসুদুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবো। এরপর ব্যবস্থা নেবো।
শিবচর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এটা কোনো ভাবেই গ্রহনযোগ্য না। তদন্ত কমিটি করে দেবো। যদি কোনো শিক্ষক জড়িত থাকেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।