বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়ায় নয় বছরের শিশু বুলবুলকে গলাটিপে হত্যার পর ইটভাটায় লাশ গুমের ঘটনায় সুজন সরকার (২৪) নামে যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (১০ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাবিবা মণ্ডল এ রায় দেন। দণ্ডিত সুজন সরকার শাজাহানপুর উপজেলার মাদলা ইউনিয়নের লক্ষ্মীকোলা গ্রামের জাফর সরকারের ছেলে।
নিহত শিশু বুলবুল হোসেন বিজয় একই গ্রামের সাইদুল ইসলাম সরকারের ছেলে এবং মাদলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। ২০২২ সালের ৫ অক্টোবর বুলবুল নিখোঁজ হয়। পরে ১১ অক্টোবর সকালে তার লাশ এলাকার ইটভাটার চিমনি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি মো. নাছিমুল করিম হলি জানান, বুলবুল ও সুজন মাছের টোপ খুঁজতে এলাকার বাঁশ ঝাঁড়ে যায়। যাওয়ার পথে সুজনের মায়ের নামে খারাপ কথা বলে বুলবুল। তখন রাগান্বিত হয়ে বুলবুলের গলাটিপে ধরে সুজন। এতে শ্বাসরোধ হয়ে সেখানে মারা যায় বুলবুল। কিন্তু সে অজ্ঞান হয়েছে মনে করে সেখান থেকে চলে আসে সুজন। পরে সন্ধ্যার দিকে বুলবুলের খোঁজে মাইকিং শুনে সুজন আবারও বাঁশ ঝাড়ে যায়। সেখানে গিয়ে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। তখন বাড়ি থেকে ছুরি নিয়ে এসে বুলবুলের হাত-পায়ের রগ কেটে দেন। আর লাশ নিয়ে গ্রামের পাশের পরিত্যক্ত ইটের ভাটার চিমনিতে ফেলে দেন। এরপর চিমনির ঢাকনা লাগিয়ে পালিয়ে আসেন।
অতিরিক্ত পিপি আরও জানান, ছয় দিন পর লাশ পচে দুর্গন্ধ ছড়ালে স্থানীয়রা টের পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ১১ অক্টোবর সকালে তার লাশ উদ্ধার করে। বুলবুলের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরে তার বাবা সাইদুল ইসলাম শাজাহানপুর থানায় মামলা করেন।
এর আগে ঘটনাস্থলে তদন্তকালে সুজনের গতিবিধি সন্দেহ হলে তাকে আটক করে পুলিশ। পরে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে পরের দিন ১২ অক্টোবর আদালতে জবানবন্দি দেন সুজন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরও জানান, বিচারক আসামি সুজন সরকারকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।