পিরোজপুর প্রতিনিধি : এনজিওর মাঠ কর্মকর্তাদের অপমানজনক কথা সইতে না পেরে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার গৃহবধূ তসলিমা বেগম (৫২) গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। ‘ডাক দিয়ে যাই’ এনজিওর নেছারাবাদ উপজেলার ইন্দেরহাট শাখার ছয় জন কর্মকর্তাকে আসামি করে মৃত তসলিমার ছেলে তামিম বাদী হয়ে শনিবার (১৬ মার্চ) থানায় মামলা করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) উপজেলার উত্তর-পশ্চিম সোহাগদল গ্রামের গৃহবধূ তসলিমা এনজিওর মাঠ কর্মকর্তাদের অপমানজনক কথা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন, ওই এনজিওর ইন্দেরহাট শাখার ফিল্ড অফিসার সমির চন্দ্র ঘোষ, সাইফুর রহমান, আহাদ হোসেন, নির্বাহী পরিচালক শাহজাহান গাজী, এরিয়া ম্যানেজার আসাদ্দুজামান মিলন ও ব্রাঞ্চ ম্যানেজার দ্বীপঙ্কর শীল। মামলায় আসামিদের পরস্পর যোগসাজশে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়ায় অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার বাদী তামিম বলেন, ‘‘আমরা ছোট ভাই মিরাজ নিজ স্ত্রীর নামে ‘ডাক দিয়ে যাই’ এনজিওর ইন্দেরহাট শাখা থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেয়। যে ঋণে মিরাজ আমাদের মা তসলিমাকে সাক্ষী রাখেন। মিরাজ কয়েকটি কিস্তি পরিশোধের পর বাড়ি থেকে সটকে পড়ে। কিস্তি খেলাপি হওয়ায় এনজিওর লোকেরা যখন-তখন বাড়িতে এসে মাকে চাপ দিচ্ছিলেন। ঘটনার দিন ১৩ মার্চ সন্ধ্যার পরে অভিযুক্তরা বাড়িতে এসে মাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন। তাদের অপমান সইতে না পেরে আমাদের মা ওই রাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পর দিন সকালে বাড়ির পাশে বাগানের মধ্যে তার ঝুলন্ত লাশ পেয়েছি।’’
নিহত তসলিমার স্বামী দিনমজুর মোস্তফা অভিযোগ করে বলেন, ‘যেহেতু আমাদের ছোট ছেলে মিরাজ ঋণ নিয়েছে। তাই এনজিওর চাপে আমরা স্বামী ও স্ত্রী দিনমজুরি করে সপ্তাহে ৩০০ টাকা করে কিস্তি দিতে চেয়েছিলাম। তারা না মেনে আমার স্ত্রীকে যা ইচ্ছা তাই বলেছেন। তাদের কথা সইতে না পেরে স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।’
এনজিও এর পরিচালক তাজুল ইসলাম খান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের ঋণগ্রহীতা কলি বেগম অভিযোগকারী পরিবারের পুত্রবধূ। তারা ওই বাসায় থাকতেন। তাই আমার অফিসের লোক তাদের বাসায় গিয়ে কলির শাশুড়ি তসলিমার কাছে কলি ও তার স্বামী মিরাজের ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলেন মাত্র। কোনো ধরনের অপমানজনক কথা বলা হয়নি।’
নেছারাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সরোয়ার জানান, এ ব্যাপারে থানায় মামলা করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।