আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়েছে ইউরোপের চার দেশ স্পেন, আয়ারল্যান্ড, স্লোভেনিয়া ও মাল্টা। দেশ চারটির নেতারা গতকাল শুক্রবার বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কাউন্সিলের বৈঠকের পর যৌথভাবে এ ঘোষণা দেন। খবর আনাদোলুর।
এ বিষয়ে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেন, কাউন্সিলের সমাবেশের ফাঁকে আইরিশ, মাল্টিজ এবং স্লোভেনিয়ান নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। তিন দেশের সঙ্গে মিলে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছে স্পেন।
বৈঠকে গাজার বিপর্যয়কর মানবিক পরিস্থিতি ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এর অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাব এবং সেইসাথে গাজায় সাহায্যের অপর্যাপ্ত প্রবেশের কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। প্রথমবারের মতো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সর্বসম্মতভাবে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী সানচেজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সত্যি বলতে, এখনই সময়।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘গাজায় উপত্যকায় মানবিক পরিস্থিতির চরম অবনতি ও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনির প্রতি অবিচার অসহনীয়। এটা শেষ করতে আমাদের অবদান রাখতে হবে।’
বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে আয়ারল্যান্ড বলেছে, দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের একমাত্র উপায় হলো একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়ন করা। তবেই শান্তি ও নিরাপত্তায় বসবাস করতে পারবে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা।
এদিকে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাব পাস হয়নি। পরিষদের দুই স্থায়ী সদস্য চীন ও রাশিয়া বিপক্ষে ভোট দেওয়ায় প্রস্তাবটি পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, প্রস্তাবটিতে অত্যন্ত রাজনীতিকরণ এবং রাফাতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান চালানোর জন্য একটি কার্যকর সবুজ সংকেত রয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত আলজেরিয়ার দূত আমার বেন্দজামা বলেন, প্রস্তাবের পাঠ্য (টেক্সট) অপূর্ণ। তা ফিলিস্তিনিদের সহ্য করা অপরিসীম যন্ত্রণা তুলে ধরতেও ব্যর্থ। যারা বিশ্বাস করে, ইসরায়েলি দখলদার শক্তি আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা বজায় রাখবে তারা ভুল। তাদের এই কল্পকাহিনী বাদ দিতে হবে।
গেল বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, এই হামলায় প্রায় ১২০০ নিহত ও দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস যোদ্ধারা। এর জবাবে ওই দিনই গাজায় বিমান হামলা ও পরে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তাদের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আর আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭৪ হাজার।