নিজস্ব প্রতিবেদক : পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চলের প্রায় দেড় কোটি মানুষ স্বজনদের কাছে যাবেন। এসব মানুষ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনসহ ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় অবস্থান করছেন। এই বিপুল সংখ্যক ঈদযাত্রীর ৬০ শতাংশ যাবেন সড়কপথে। সে হিসেবে সড়কপথে যাত্রী প্রায় ৯০ লাখ। অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ মানুষ নৌ ও রেলপথে ঢাকা ছাড়বেন।
নাগরিক সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির ঈদপূর্ব পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সোমবার (১ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংগঠনটি। তবে, সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে এ সংক্রান্ত তথ্যভাণ্ডার না থাকায় প্রতিবেদনটি ‘শতভাগ বস্তুনিষ্ঠ’ না-ও হতে পারে বলে স্বীকার করেছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে।
জাতীয় কমিটি জানায়, বিগত বছরগুলোর মতো এবারও সড়কপথে জনভোগান্তি ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা আছে। তবে, নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রার জন্য সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।
সর্বশেষ জনশুমারির বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা বিভাগে ৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাস করেন। তাদের মধ্যে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় থাকেন যথাক্রমে ৫৯ লাখ ৭৯ হাজার ৫৩৭ জন ও ৪২ লাখ ৯৯ হাজার ৩৪৫ জন। দেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ পোশাক কারখানা গাজীপুর অঞ্চলে হওয়ায় গাজীপুর মহানগরে জনসংখ্যা এখন প্রায় ৭০ লাখ। নারায়ণগঞ্জ মহানগরে বাস করেন ২৫ লাখ মানুষ। তিন শহরের বাইরে এসব জেলায় আরো প্রায় ৫০ লাখ মানুষ বাস করেন। এছাড়া, নরসিংদী ও মানিকগঞ্জ জেলায় জনসংখ্যা যথাক্রমে ২৬ ও ২০ লাখ।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি জানায়, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জনবহুল বড় শহরসহ শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকাগুলোর অন্তত ৫০ শতাংশ মানুষ বর্তমান আবাসস্থল ছেড়ে যান। গবেষক নাগরিক সংগঠনসহ পরিবহনবিষয়ক বিভিন্ন সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে ঈদে বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চল ছেড়ে যান প্রায় দেড় কোটি মানুষ।
সাধারণত এক সপ্তাহ আগে ঈদযাত্রা শুরু হয়, উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, মাত্র সাত দিনে বিপুল সংখ্যক মানুষকে সুশৃঙ্খলভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতা সড়ক পরিবহন খাতে নেই। সরকার সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দিলেও দূরপাল্লার অনেক সড়কের কিছু স্থানের অবস্থা এখনো বেহাল।
সারা দেশে পাঁচ শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে মহাসড়কগুলোতে পণ্যবাহী ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানসহ হাজার হাজার মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলবে। এছাড়া, জাতীয় মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কের অনেক স্থানে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে টোল আদায় করা হয়। সব মিলিয়ে বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ যানজট, বাসের সময়সূচি বিপর্যয় এবং অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার ঝুঁকিও আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রার জন্য সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো এবং সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এতে ঈদযাত্রায় জনদুর্ভোগ অনেক কমবে বলে আশা প্রকাশ করা হয় প্রতিবেদনে।