সাভার প্রতিনিধি, ঢাকা : ঢাকার ধামরাইয়ে লিকেজ থেকে জমা গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ বাবা-ছেলে মারা গেছেন। সোমবার (১ এপ্রিল) ভোর ৪টা থেকে সকালে ১১টার মধ্যে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান।
ওই ঘটনায় গতকাল রোববার দুপুরে এক জনের মৃত্যু হয়। চিকিৎসাধীন অপর জনের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
এর আগে, গত ২৭ মার্চ রাত সাড়ে ৩টার দিকে ধামরাই পৌরসভার মোকামটোলা এলাকায় ইব্রাহিম হোসেনের চার তলা ভবনের নিচ তলার ফ্ল্যাটে জমে থাকা গ্যাসের বিস্ফোরণ থেকে লাগা আগুনে একই পরিবারের চার জন দগ্ধ হন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, আজ সোমবার ভোর ৪ টার দিকে নুরুল ইসলাম নান্নু মিয়া (৫৫) এবং সকাল ১১টার দিকে তার ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী আল হাদী সোহাগ মারা যান। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে নুরুল ইসলামের স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৫০) মারা যান। ওই ঘটনায় ১৬ শতাংশ দগ্ধ গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী নিশরাত জাহান সাথী (২২) এখনো চিকিৎসাধীন।
সূত্র আরও জানায়, মারা যাওয়াদের মধ্যে সুফিয়া বেগমের শরীরের ৮০ শতাংশ, নুরুল ইসলামের ৪৮ শতাংশ এবং সোহাগের ৪৩ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
মৃতের স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নুরুল ইসলাম সরকারের স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। এক বছর আগে তিনি অবসরে যান। এরপর থেকে পরিবারসহ ধামরাই পৌর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। গত ২৭ মার্চ রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই বাসায় লিকেজ থেকে জমা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণে ৩ কক্ষের ফ্ল্যাটে আগুন লাগে। এতে পরিবারের চার জনই দগ্ধ হন। প্রথমে তাদের ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরবর্তীতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে গতকাল রোববার থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যু হয়।
মৃত সুফিয়া বেগমের ভাই মজিবর রহমান বলেন, মরদেহ হাসপাতাল থেকে বাড়ি নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তাদের গ্রামের বাড়িতেই দাফন করা হবে।
বাইশাকান্দা ইউনিয়ের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও নুরুল ইসলামের ভাগ্নে মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, একদিনের মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ বাড়ি আনা হবে। স্থানীয় কবরস্থানে তাদের দাফন করা হবে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, দগ্ধ নুরুল ইসলাম, সুফিয়া বেগম ও সোহাগ হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসাধীন অপরজনের অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও তিনি শঙ্কামুক্ত নন।