বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবানে রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় অপহৃত ব্যাংক কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিনকে অর্থের বিনিময় ছাড়াই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে র্যাব।
কৌশলগত পরিকল্পনা করে স্থানীয় প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক খন্দকার আল মঈন।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বেলা ১১ টায় সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার আল মঈন এ সব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত ৯ টার দিকে লুট হওয়া ব্যাংকের ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন নিজাম উদ্দিন। তিনি ওই সময় ব্যাংকের পাশে মসজিদে তারাবির নামাজ আদায় করছিলেন। ব্যাংকে ভল্টের চাবির জন্য ৮/১০ জন সন্ত্রাসী অস্ত্র ঠেকিয়ে তাকে মসজিদ থেকে ব্যাংকে নিয়ে আসে। পরে ভল্টের চাবি নিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা।
কিন্তু ভল্টে থাকা ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা নিতে না পেরে ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা। এ সময় কুকি-চিনের ১০০’র বেশি সদস্য এ ব্যাংক ডাকাতিতে অংশ নেয়। ব্যাংক লুট করার পর পুলিশের অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণে গোলাবারুদ নিয়ে যায় তারা। সেই সাথে কেএনএফ সদস্যরা স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে বিপুল পরিমাণে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তাকে একটা গ্রুপ অপহরণ করে নিয়ে গেছে এমন নয়। অপহরণের পর এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে নিয়ে যায় তাকে। এক পাহাড়ে একটি গ্রুপ তাকে গাইড করে নিয়ে যায়। কখনো অপহৃত নিজাম উদ্দিনকে চোখ বন্ধ করে নিয়ে যায়। আবার কখনো চোখ খোলা রেখে নিয়ে যায়। রাত তিনটার দিকে তাকে খাবার হিসেবে নুডলস দেওয়া হয়।
অপহরণের পর থেকে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা বিভিন্নভাবে তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে কেএনএফ সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করতে সমক্ষ হয়। পরে রুমা থেকে নিজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করে জেলা শহরে আনা হয়।
তবে পুলিশ ও ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মীর ব্যবহৃত অস্ত্রের ব্যাপার আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রুমায় ব্যাংক লুটের পরের দিন থানচিতে দুইটি ব্যাংকের টাকা লুট করে নিয়ে যায়। কেএনএফ সদস্যরা তাদের সক্ষমতা বুঝাতে ব্যাংক লুট-অপহরণকালে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আজ থেকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালানো হবে। যারা শান্তি প্রিয় এলাকায় ব্যাংক ডাকাতিসহ নানান সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।