রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীতে ঈদের ছুটিতে ফাঁকা সড়কেও ঘটছে প্রাণহানি। ঈদের দিন ও ঈদের পর দিন সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে তিন জনের। এর মধ্যে দুজন পরস্পর বন্ধু।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- রাজশাহীর পবা উপজেলার কয়রা গ্রামের সাধু মিয়ার ছেলে শান্ত হোসেন (২০) ও আক্কাস আলীর ছেলে ফাহিম ইসলাম (২০)। তারা পরস্পর বন্ধু। এ ছাড়া অপর জনের নাম আজিজুল ইসলাম (১৮)। তিনি জেলার পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর থানার ভড়ুয়া গ্রামের আকানি ইসলামের ছেলে। নিহতদের মধ্যে শান্ত ও ফাহিম বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) এবং আজিজুল ইসলাম শুক্রবার (১২ এপ্রিল) পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন।
রাজশাহীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মোবারক পারভেজ জানান, ঈদের দিন বিকেলে শান্ত তার দুই বন্ধুসহ আরও কয়েকজন মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়েছিলেন। তবে ঈদ উদযাপন করতে গিয়ে তারা সড়কে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। তারা ঘুরতে ঘুরতে মহানগরীর বুধপাড়া ফ্লাইওভারের কাছে পৌঁছায়। কিন্তু অতিরিক্ত গতির কারণে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন।
এ সময় তাদের মোটরসাইকেলটি সড়ক বিভাজকের সাথে গিয়ে সজোরে ধাক্কা খায়। এতে দুজনই সড়কের ওপর ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
রামেক হাসপাতালে ভর্তির কিছুক্ষণ পর শান্ত মারা যান। এরপর বৃহস্পতিবার রাতেই একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তরের পর মারা যান তার বন্ধু ফাহিমও। এই ঘটনায় রাতেই নিহতদের মরদেহ আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলেও জানান মতিহার থানার এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে, রাজশাহীতে ঈদের ছুটির দ্বিতীয় দিনে মিনি পিকআপভ্যানে করে সাউন্ড বক্সে গান বাজিয়ে নাচতে নাচতে যাওয়ার সময় বাসের ধাক্কায় এক কিশোর নিহত হয়েছে। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই কিশোরের নাম আজিজুল ইসলাম। সে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ভরুয়াপাড়া এলাকার আকানি ইসলামের ছেলে।
রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমরান হোসেন জানান, শুক্রবার সকালে আজিজুল তার বন্ধুদের নিয়ে একটি ভাড়া করা মিনি পিকআপভ্যানে করে সাউন্ডবক্সে গান বাজিয়ে নাচানাচি করতে করতে যাচ্ছিল। এ সময় একটি যাত্রীবাহী বাস ওই পিকআপকে ধাক্কা দেয়। এতে ওই কিশোর সড়কের ওপর ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। এ সময় স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বর্তমানে ওই কিশোরের মরদেহ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মরচুয়ারিতে রাখা হয়েছে৷ থানার সীমানা নিয়ে জটিলতা আছে, সেটি সুরাহা করে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।