আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্থূলতা ও দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক যে নির্দেশিকাগুলো রয়েছে তা লঙ্ঘন করে অনেক দরিদ্র দেশে শিশুদের দুধ ও সিরিয়াল পণ্যগুলোতে চিনি এবং মধু যুক্ত করে বিক্রি করেছে নেসলে। একটি প্রতিবেদনে বিশ্বের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্য সংস্থাটির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়েছে।
সুইস অনুসন্ধানী সংস্থা পাবলিক আই-এর ক্যাম্পেইনাররা এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকায় বিক্রি হওয়া সুইস বহুজাতিক সংস্থার শিশু খাদ্য পণ্যের নমুনা পরীক্ষার জন্য বেলজিয়ামের একটি পরীক্ষাগারে পাঠিয়েছে। তাতে দেখা গেছে, এক বছর বা তার বেশি বয়সী শিশুদের জন্য ফলো-আপ মিল্ক ফর্মুলা ব্র্যান্ড নিডো এবং ছয় মাস থেকে দুই বছর বয়সীদের খাদ্য সেরেলাকে সুক্রোজ বা মধুর আকারে চিনি যোগ করা হয়েছে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, যুক্তরাজ্যসহ নেসলের প্রধান ইউরোপীয় বাজারগুলোতে বাচ্চাদের জন্য বাজারজাত করা এই খাদ্যপণ্যে কোনও চিনি যুক্ত করা হয় না।
পাবলিক আই-এর কৃষি ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ লরেন্ট গ্যাবেরেল বলেন. ‘নেসলেকে অবশ্যই এই বিপজ্জনক দ্বৈত মানদণ্ডের অবসান ঘটাতে হবে এবং বিশ্বের প্রতিটি অংশে তিন বছরের কম বয়সী শিশুদের সব পণ্যে চিনি যোগ করা বন্ধ করতে হবে।’
নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে স্থূলতা ক্রমবর্ধমান একটি সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আফ্রিকায় ২০০০ সাল থেকে পাঁচ বছরের কম বয়সী অতিরিক্ত ওজনের শিশুদের সংখ্যা প্রায় ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
শুধুমাত্র প্যাকেজিং-এ মুদ্রিত পুষ্টি সংক্রান্ত তথ্যের ভিত্তিতে একটি পণ্যে যোগ করা চিনি রয়েছে কিনা এবং তা কতটা উপস্থিত রয়েছে তা বলা যে কোনও দেশের ভোক্তাদের পক্ষে সবসময় সহজ নয়। লেবেলগুলোতে যেসব ফল বা উপাদানের কথা উল্লেখ করা হয় সেগুলোর শিরোনামের মধ্যে প্রায়ই কৃ্ত্রিম শর্করা অন্তর্ভুক্ত থাকে।
ইউরোপীয় অঞ্চলের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, তিন বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য কোনও খাবারে কৃত্রিমভাবে শর্করা বা মিষ্টিজাতীয় উপাদান যুক্ত করার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। যদিও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের জন্য বিশেষভাবে কোনও নির্দেশিকা তৈরি করা হয়নি, তবে গবেষকরা জানিয়েছেন, ইউরোপীয় নির্দেশিকা বিশ্বের অন্যান্য অংশের জন্য সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।