নিজস্ব প্রতিবেদক : সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন সংখ্যা ১ লাখ অতিক্রম করেছে সোমবার (২৯ এপ্রিল)। এটাকে মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করছে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষ।
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মাইলফলক অতিক্রম সংক্রান্ত একটি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। এ সময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী বয়স্ক জনগোষ্ঠীর টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করেন। শুরুতে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা নামে চারটি স্কিম দিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিম যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে সব স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদেও জন্য ‘প্রত্যয়’ নামে নতুন স্কিম চালু করা হয়েছে, যা আগামী ১ জুলাই থেকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানে যোগদানকারী কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে কার্যকর হবে।
সর্বজনীন পেনশনকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে মাঠ প্রশাসনকে সক্রিয়ভাবে যুক্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ‘সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও সমন্বয় কমিটি’ গঠন করেছে এবং মাঠ প্রশাসনকে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলাভিত্তিক নিবন্ধন মনিটরিং ও বাস্তবায়ন করছেন। বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বজনীন পেনশন মেলা ও কর্মশালার আয়োজন করে সব শ্রেণি-পেশার জনগণকে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে গত ১৯ এপ্রিল রাজশাহীতে বিভাগীয় পেনশন মেলা ও কর্মশালা হয়েছে। পরবর্তীতে অবশিষ্ট সাত বিভাগে পেনশন মেলা হবে। বিতরণের জন্য মাঠ প্রশাসনের কাছে ইতোমধ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক ফ্লায়ার ও বুকলেট পাঠানো হয়েছে এবং তা অব্যাহত আছে। এছাড়া, সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রমে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগের ফলে নিবন্ধন সংখ্যা মাইলফলক ১ লাখ অর্জিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে চাঁদাদাতাদের অর্থ থেকে নিরাপদ ট্রেজারি বন্ডে ৪২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। সবার সহযোগিতায় সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধনের এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নাগরিকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম ধারণা দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। এ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত সর্বজনীন পেনশন স্কিম নাগরিকদের বৃদ্ধ বয়সে আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগ বাংলাদেশের ইতিহাসে যুগান্তকারী জনকল্যাণমূখী পদক্ষেপ, যা সব নাগরিকের অবসরকালীন আর্থিক মুক্তির সনদ হিসেবে বিবেচিত হবে। এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ একটি অধিকতর কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।
উল্লেখ্য, সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রমের নিবন্ধন থেকে শুরু করে মাসিক জমা, হিসাবায়ন, নিবন্ধনকারী কর্তৃক তার কর্পাস হিসাব যাচাই ইত্যাদি সব প্রক্রিয়া ডিজিটাল আইটি প্ল্যাটফর্মে সম্পাদিত হয়, যা প্রধানমন্ত্রীর ২০৪১ সালের উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।