নিজস্ব প্রতিবেদক : দুই দিনের বৃষ্টিতে রাজধানীতে ভ্যাপসা গরম বিদায় নিয়েছে। প্রশমিত হয়েছে তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ মঙ্গলবার (৭ মে) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৩ জেলায় বহমান তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে।
অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত শুক্রবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, পরের দিন যা কমে দাঁড়ায় ৩৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রোববার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সোমবার (৬ মে) নেমে আসে ২৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
বর্তমানে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছেছে।
এদিকে, একদিনের ব্যবধানে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় তিন ডিগ্রি কমে গিয়ে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে নেমে এসেছে। সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি, যা আগের দিন ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত ৩১ মার্চ থেকে টানা ৩৭ দিন ধরে দেশে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা ৭৬ বছরের মধ্যে রেকর্ড। পুরো এপ্রিল জুড়ে তীব্র, কখনও অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে।
গত ৩০ এপ্রিলে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় যশোরে, যা গত পাঁচ দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এদিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ১৯৯৫ সালে চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল আগের নয় বছরের মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ঈশ্বরদীতে, ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ২০১৪ সালের মে মাসে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯৭২ সালের ১৮ মে, ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২৯ এপ্রিল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল তার আগের ৫৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ, ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকায় ১৯৬৫ সালে থার্মোমিটারের পারদ ওঠেছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এর আগে ১৯৬০ সালে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ মঙ্গলবারসহ পরবর্তী ৩ দিনের পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, গোপালগঞ্জ, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা প্রশমিত হতে পারে।
রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বুধবারের পূর্বাভাস
রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবারের পূর্বাভাস
ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।