কক্সবাজার প্রতিনিধি : বর্তমান সময়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা বাংলাদেশে আরসা’র অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক ও কমান্ডার মো. শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম (৩৮) ও মো. রিয়াজকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বুধবার (১৫ মে) ভোরে উপজেলার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন লাল পাহাড় থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্রসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নাশকতা করতে এসব অস্ত্র মিয়ানমার থেকে এনে পাহাড়ে মজুদ করেছিলেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশে সৃষ্ট সংঘর্ষকে কাজে লাগিয়ে আরসাসহ সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো আগ্নেয়াস্ত্রসহ এদেশে প্রবেশ করে। এ ছাড়াও কিছু নেতৃপর্যায়ের আরসা সদস্যের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিচরণ করার তথ্য পেয়েছে র্যাব।
তিনি আরও বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার ভোররাতে কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন লাল পাহাড়ে আরসা’র আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশে আরসা’র অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক ও কমান্ডার মো. শাহনুর ওরফে মাস্টার সলিমসহ দুইজন আরসা সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৫টি গ্রেনেড, ৩টি রাইফেল, ১০টি দেশিয় প্রযুক্তির হ্যান্ড গ্রেনেড, ১৩টি ককটেল, ১টি বিদেশি রিভলবার, ৯ রাউন্ড ৯এমএম পিস্তলের এ্যামুনিশন, ১টি এলজি এবং ৩টি ১২ বোর কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, মো. শাহনুর ওরফে মাস্টার সলিম ২০১৭ সালের মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ এবং ক্যাম্প-১৫ তে বসবাস শুরু করেন। সে মিয়ানমার থাকাকালীন সেখানকার জোন কমান্ডারের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। এ ছাড়াও আরসা প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনির দেহরক্ষী হিসেবে ২ মাস দায়িত্ব পালন করেন। আরসা’র হয়ে তারা আধিপত্য বিস্তারে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। তারা অস্ত্র চালনাসহ বিভিন্ন বিস্ফোরকের উপর পারদর্শী।
প্রাথমিকভাবে ক্যাম্প-১৫ এর কমান্ডার হিসেবে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে আরসা নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়ায় তিনি বাংলাদেশে আরসা’র প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব নেন। মিয়ানমারে সৃষ্ট সংঘর্ষের ফলে লুটকৃত অস্ত্র-গোলাবারুদ বিভিন্ন মাধ্যম হতে সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাস সৃষ্টি করেন। তার বিরুদ্ধে ৩টি হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে।
অপরদিকে গ্রেপ্তার মো. রিয়াজ ২০১৮ সালে আরসায় যোগদান করেন। তিনি ২০১৯ সালে মিয়ানমারে ফিরে যান এবং সেখানে মাইন, বোমা, হাত বোমা ও বিস্ফোরক তৈরিতে ৬ মাসের প্রশিক্ষণ নেন। পরে বাংলাদেশে প্রবেশ করে মাস্টার সলিমের অন্যতম সহযোগী হয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করেন। তার বিরুদ্ধে ১টি হত্যা মামলা রয়েছে।
র্যাবের মুখপাত্র আরফাত ইসলাম জানিয়েছেন যে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।