মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী মোহন ডি সিলভা নিজেই জানিয়েছেন, বাংলাদেশ জাতীয় দল আগামী ২৪ সেপ্টেস্বর কলম্বোয় পা রাখবে।
তারও আগে বিসিবি পরিচালক এবং ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান জানিয়েছেন, আগামী ২৪ অক্টোবর শুরু বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কার প্রথম টেস্ট।
খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে এক মাস আগে রাজধানী ঢাকা ছেড়ে কলম্বো যাওয়া কেন বাংলাদেশ দলের? এত দীর্ঘ সময় আগে শ্রীলঙ্কা কি গিয়ে কি করবে টাইগাররা?
শুধু প্রশ্ন উঁকি-ঝুকি দেয়াই নয়, কেউ কেউ বিসিবির এত লম্বা সময় আগে শ্রীলঙ্কা যাওয়ার হিসেবও মেলাতে পারছেন না। রীতিমত গোলমেলে একটা অবস্থারও উদ্রেক ঘটেছে। এমনও প্রশ্ন উঠেছে যে, আসলেই কি বাংলাদেশ দল এক মাস আগে যাবে? নাকি বিসিবি থেকে ভুল-ভাল সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে?
একই সাথে আরও একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন অনেকের মনেই দেখা দিয়েছে। তাহলো যদি সত্যিই ২৪ অক্টোবর বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কার মধ্যে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হয়, তাহলে সাকিবেরই কি হবে? কারণ, ২৯ অক্টোবরই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে সাকিবের ওপর থেকে।
তিন বা দুই (পরে এক টেস্ট কমিয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ আয়োজনের চিন্তা ভাবনা চলছে) টেস্ট- যাই হোক না কেন, সাকিব তো আগামী ২৯ অক্টোবর আইসিসি নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হয়ে যাচ্ছেন। তাহলে দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সব সময়ের সেরা তারকার কি শ্রীলঙ্কার মাটিতেই আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা হবে?
সাকিব কি দ্বিতীয় টেস্ট থেকেই মাঠে নামতে পারবেন? নাকি দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে থাকার কারণে তাকে টেস্ট না খেলিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে আবার কাম ব্যাক করানো হবে? সাকিব ইস্যুতে বিসিবির চিন্তা ভাবনা কি? এ ব্যাপারে বোর্ডের ভাষ্য কি?
এসব কৌতুহলি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই বেরিয়ে এসেছে বড় তথ্য। এসব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়েই বুধবার দুপুরে বিসিবিতে এক অনানুষ্ঠানিক গুরুত্বপূর্ণ সভায় বসবেন ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির সদস্যরা।
বুধবার সকালে ক্রিকেট অপস চেয়ারম্যান আকরাম খান এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সে কারণেই আজ বুধবার দুপুরে আমরা একসঙ্গে বসবো।’
‘আমরা’ বলতে কারা? জানতে চাইলে আকরাম খান বলেন, ‘আমরা ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির সাথে দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, হাবিবুল বাশার সুমন ও এইচপির চেয়ারম্যান নাঈমুর রহমান দুর্জয়ও থাকবে এ বৈঠকে।’
আকরাম খান আরও জানালেন, ‘এ বৈঠকে শ্রীলঙ্কা সফরে জাতীয় দলের অনুশীলন তথা প্রস্তুতি, সাকিব আল হাসানের ফেরার ইস্যুসহ সব বিষয় নিয়েই কথা-বার্তা হবে।’
একই কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল অবেদিন নান্নুও। তার কথা, ‘প্রস্তুতি কবে, কোথায় শুরু হবে- সেটা ক্রিকেট অপস দেখবে। আমাদের যখন বলা হবে, তখনই আমরা দল নির্বাচন করে খেলোয়াড় তালিকা বোর্ডে দিয়ে দেব। আর সাকিব ইস্যুটি তো ওপেন। সাকিব ফ্রি হয়ে গেলে তাকে না খেলানোর প্রশ্নই আসে না।’
এদিকে সাকিব ইস্যুতে আকরাম খান জানিয়েছেন, ‘আমরা আজ বুধবার বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো। কি করা যায়? তা নিয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনার পর একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিব।’
আকরাম আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিলেন। তিনি জানিয়েছেন, যদি দেশের মাটিতে করোনা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি না হয়, তাহলে শ্রীলঙ্কা গিয়েই জাতীয় দলের অনুশীলন শুরুর চিন্তা-ভাবনা আছে। সেভাবে প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে।
আকরাম বলেন, ‘আমরা নিজেদের পয়সা খরচ করে একমাস আগে যেতে চাচ্ছি জেনে ও বুঝেই। যদি দেশে জাতীয় দলের পুরোদস্তুর অনুশীলন শুরু করা সম্ভব না হয়, তাহলে হয়ত শ্রীলঙ্কা গিয়ে একবারে প্র্যাকটিস শুরু হতে পারে।’
তাহলে সেখানে প্র্যাকটিস সুযোগ সুবিধা কেমন থাকবে? লঙ্কান বোর্ড কি কি সুযোগ সুবিধা দেবে? নেট বোলার মিলবে কি না? স্থানীয় সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করেই আগানোর কথা ভাবছে বিসিবি।
জাতীয় দলের অনুশীলন ও প্রস্তুতি যথাযথভাবে পরিচালনা করতে একই সময়ে তাদের পাশাপাশি এইচপি দলকেও শ্রীলঙ্কা পাঠানো হতে পারে বলে আকরাম আভাস দিলেন।
আজ বুধবারের যৌথ সভায় এসব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।