রাজধানীতে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী ‘অ্যাডভান্সড টেকনোলজি সল্যুশন বা এটিএস এক্সপো-২০২৪’। দ্বিতীয়বারের মত একক এই বৃহৎ শিল্পমেলা আয়োজন করেছে দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি’র হল-৩ এ মেলা শুরু হয়ে চলবে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) পর্যন্ত।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘এটিএস এক্সপো-২০২৪’ এর উদ্বোধন করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, এফসিএমএ। এসময় অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র ভাইস-চেয়ারম্যান এস এম আশরাফুল আলম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান, উরি ব্যাংকের কান্ট্রি হেড জিন হুর, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন পিএলসি’র চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার নাজিথ মীওয়ানাগে প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এনবিআর এর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ওয়ালটন বাংলাদেশকে গর্বিত ও সম্মানিত করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানি করছে ওয়ালটন। বিশ্বে বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করেছে ওয়ালটন।
তিনি আরো বলেন, এটিএস এক্সপোতে এসে শুধু ওয়ালটন সম্পর্কেই নয়; বাংলাদেশের সক্ষমতার বিষয়েও দারুণ ধারণা পেয়েছি। প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গিয়েছে। ওয়ালটন শুধু নিজেরাই এগিয়ে যাচ্ছে না; দেশের অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানকেও এগিয়ে নিতে কাজ করছে।
বৈশ্বিক বাজারে ওয়ালটন পণ্যের চাহিদা সম্পর্কে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অফিসিয়াল কাজে বেশ কিছুদিন পূর্ব তিমুরে ছিলাম। সেখানকার বাজারে ওয়ালটন পণ্যের ব্যাপক চাহিদা দেখেছি। ওয়ালটন পণ্যের উচ্চ গুণগতমান দেশটির ক্রেতাদের আস্থা জয় করে নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, ওয়ালটনের নিজস্ব প্রোডাকশন প্ল্যান্টে ফিনিশড প্রোডাক্টস, কাঁচামাল, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার, প্যাকেজিংসহ সব ধরনের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস ও কম্পোনেন্টস উৎপাদিত হচ্ছে। এসব পণ্য বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করতে সক্ষম ওয়ালটন। দেশীয় শিল্পোদ্যোক্তাদের নিকট ওয়ালটনের এই সক্ষমতা তুলে ধরে দেশের আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করার লক্ষ্যেই এটিএস এক্সপো আয়োজনের উদ্যোগ।
তিনি জানান, স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় শিল্পজাত উপকরণ এখন দেশেই তৈরি করছে ওয়ালটন। এসব পণ্য এখন আর বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে না। এতে করে স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উপকরণ ক্রয়ের খরচ এবং সময়ও যেমন কমবে, তেমনি দেশের আমদানি নির্ভরতা হ্রাসের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে।
সরকারকে দেশীয় শিল্পে প্রদত্ত নীতি সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে ওয়ালটনের এমডি বলেন, অ্যাসেম্বলার ও ম্যানুফ্যাকচার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আইনগত পার্থক্য করা প্রয়োজন।
ওয়ালটনের ভাইস-চেয়ারম্যান এস এম আশরাফুল আলম বলেন, এটিএস এক্সপোর মাধ্যমে বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বে ভিন্নভাবে পরিচিত করিয়ে দিতে চাই আমরা। বিশ্বের সেরা সব পণ্য আমরা এখন দেশে তৈরি করতে সক্ষম। লাস ভেগাস, ক্যান্টন ফেয়ার এবং ফ্র্যাঙ্কফুটের মতো বিশ্ব মেলা মঞ্চে আমরা ওয়ালটন পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছি। আমরা সেখানে দেখিয়েছি, বাংলাদেশ কোথায় আছে। এখন বৈশ্বিক ক্রেতাদের এখানে এসে দেখে যেতে হবে। সারাবিশ্ব অচিরেই বাংলাদেশকে প্রযুক্তি পণ্যের হাব হিসেবে চিনবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এটিএস এক্সপো’তে একই ছাদের নিচে ওয়ালটনের সর্বাধুনিক ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টস এ উৎপাদিত আন্তর্জাতিক মানের ৫০ হাজারেরও বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস, সার্ভিসেস ও টেস্টিং সল্যুশনস প্রদর্শন করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রদর্শিত হচ্ছে এনার্জি সেভিং ও পরিবেশবান্ধব ফ্রিজ, এসি, টিভি, ওয়াশিং মেশিন, লিফটসহ বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল, হোম এবং কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য সামগ্রী।