1. [email protected] : বাংলারকন্ঠ : বাংলারকন্ঠ
  2. [email protected] : বাংলারকন্ঠ.কম : বাংলারকন্ঠ.কম
  3. [email protected] : nayan : nayan
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৪ পূর্বাহ্ন

ফ্লোর প্রাইস: বিরোধীতার আড়ালে কি ছিল?

  • আপডেট সময় : বুধবার, ১২ আগস্ট, ২০২০
  • ৪৩৮ বার দেখা হয়েছে
dse

পুঁজিবাজারে করোনা মহামারিতে বিনিয়োগকারীদেরকে রক্ষা করার জন্য বিগত কমিশন সব শেয়ার ও ইউনিটে ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন সীমা) বেধে দেয়। যে সিদ্ধান্তকে আশির্বাদ হিসেবে গ্রহণ করে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তবে পুঁজিবাজারের নামধারী গুটি কয়েক ব্যক্তি এর বিরোধীতা করেন। তাদের মতে ফ্লোর প্রাইসের কারণে পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে ওই ফ্লোর প্রাইসের উপর ভিত্তি করেই বাজার এখন হাজার কোটি টাকার উপরে লেনদেন হচ্ছে এবং প্রায় সব কোম্পানিই ফ্লোর প্রাইসের উপরে উঠে এসেছে।

বিশ্ব মহামারী ভাইরাসের প্রভাবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে পতন শুরু হয়। তবে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সনাক্ত হওয়ার পরে তা মহাপতনের দিকে নিয়ে যায়। এতে করে প্রায় সব শেয়ার দরই অবমূল্যায়িত হয়ে যায়। এ তালিকায় করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়বে না এমন কোম্পানির শেয়ার দরও ছিল। অনেকটা আতঙ্কিত হয়ে বিনিয়োগকারীরা বিক্রি করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। এ সংকট উত্তোরনে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনা দেন। তবে শুরু থেকেই কয়েকজন ফ্লোর প্রাইসের বিরোধীতা করেন। এ তালিকায় বিএসইসির বর্তমান এক কমিশনারও আছেন। তাদের দাবি ছিল, ফ্লোর প্রাইসের কারনে বাজারে লেনদেন হবে না। অনেকটা নিস্ক্রিয় হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে বাজার এখন চাঙ্গা এবং ভরামৌসুমের ন্যায় লেনদেন হচ্ছে। যে কারনে ফ্লোর প্রাইস বিরোধীদের উদ্দেশ্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা সমালোচনা করা হচ্ছে। এছাড়া পুঁজিবাজার বিষয়ে তাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।

সাধারন বিনিয়োগকারীদের শুরু থেকেই ফ্লোর প্রাইস বিরোধীদের নিয়ে সন্দেহ ছিল। তারা বিশেষ কোন এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিরোধীতা করছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করতেন বিনিয়োগকারীরা। বিরোধীরা ওইসময় আতঙ্কিত বিকিয়োগকারীদের বিক্রি চাপকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন। কোনভাবে ফ্লোর প্রাইস তুলতে পারলেই শেয়ার দর আরও তলানিতে চলে যেত। যাতে ফ্লোর প্রাইস বিরোধীদের পক্ষে পানির দরে শেয়ার কেনা সম্ভব হতো। যারা শুধু নিজেদের স্বার্থের কথা চিন্তা করেছেন।

ফ্লোর প্রাইসের বিরোধীতা করে গত ১৮ জুলাই ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর.এফ হুসাইন বলেন, ফ্লোর প্রাইসের কারনে শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে। এটা তুলে দেওয়ার ব্যাপারে প্রত্যেকে বলেছেন। খবরের কাগজে মিডিয়ায় বহু লেখালেখি হচ্ছে। যারা বুঝেন, তারা সবাই বলেছেন এই ফ্লোর প্রাইস যদি থাকে, তাহলে পুঁজিবাজার শেষ হয়ে যাবে। ক্ষুদ্র কিছু বিনিয়োগকারীরা বুঝতে পারে না। তাদের ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসির অভাব আছে।

তিনি বলেন, ফ্লোর প্রাইসের কারনে মার্কেটে তারল্যের মন্দাবস্থা। এছাড়া এই পদ্ধতির কারনে ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যাচ্ছে। এটি যদি আর কয়েক মাস থাকে, তাহলে প্রতিষ্ঠানিক স্টেকহোল্ডাররা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ফ্লোর প্রাইসের কারনে লেনদেন হচ্ছে না। কোন কোন প্রতিষ্ঠান ঠিকমতো বেতন দিতে পারছে না। এদিকে বড় করে খেয়াল রাখা দরকার।

বাজারে ভালোর জন্য ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার দাবি জানালেও ব্র্যাক ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ থেকে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক ভূমিকা রাখা হয়। এই হাউজটির গ্রাহক ও ডিলার হিসাব থেকে সবচেয়ে বেশি বিক্রির চাপ দেওয়া হয়েছে। যা পুঁজিবাজারে মন্দায় বড় ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া ব্র্যাক ব্যাংকেরও ধারাবাহিকভাবে ব্যবসায় অবনতি হচ্ছে।

এমন অনেকের সমালোচনা সত্ত্বেও বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনার পক্ষে অনড় রয়েছেন। এমনকি কোন কমিশনারের আপত্তিকেও তিনি পাত্তা দেননি। অন্যথায় ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হতে পারত বর্তমান কমিশনের জন্য আত্মঘাতি। এই সিদ্ধান্ত নিলে বাজারের পতন সামলানো কমিশনের জন্য কঠিন হয়ে পড়তো। যা পুঁজিবাজারের ২০১০-১১ ইতিহাসের আরেকটি পূণরাবৃত্তি করতে পারত।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ