‘বিদেশ নামক সোনার হরিণের পেছনে অন্ধের মতো ছুটবেন না। যেকোনও দেশে যাওয়ার আগে কোথায় যাচ্ছেন, কী কাজে যাচ্ছেন তা ভালোভাবে জেনে নেবেন। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কাজের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ওই কাজে নিজেকে দক্ষ কর্মী হিসেবে তৈরি করে বিদেশে গেলে হেনস্থার শিকার হতে হবে না’বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় রাজধানীর আগাঁরগাওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বর্তমানে দেশে কাজের ও খাবারের অভাব নেই মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এমন একটা সময় ছিল যখন দেশে কর্মসংস্থানের অভাব ছিল। যুব সমাজ যারা কর্মক্ষম তারা কাজ খুঁজে পেতেন না। ফলে তাদেরকে বিদেশে পাড়ি দিতে হতো। অনেকে ভালোভাবে যেতে পেরেছেন, আবার অনেকে ধোঁকায় পড়ে সর্বস্ব খুইয়ে নিজের জীবন নষ্ট করেছেন। কিন্তু বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। বিদেশে বিনিয়োগ আসছে। তাই বিদেশে না গিয়েও নিজেকে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মী হিসেবে গড়ে তুলে দেশেই চাহিদা অনুসারে অর্থ উপার্জন সম্ভব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের আর্থসামাজিক ও অর্থনীতির উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রবাসীরা বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছেন। তাদের সার্বিক কল্যাণেও বর্তমান সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। একসময় জমিজামা ও ভিটেমাটি বিক্রি বা চড়া সুদে বন্ধক রেখে ঋণ করে বিদেশে যেতে হতো। কিন্তু বর্তমানে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে স্বল্প সুদে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়া যায়, সেজন্য জমিজমা ও ভিটেমাটি বিক্রি করতে হবে না।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘বাইরে গিয়ে প্রবাসী কর্মীদের যেন সম্মানহানি না হয় সে ব্যাপারে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বিদেশ প্রেরণের সাথে ওতপ্রোতেভাবে জড়িত বিভিন্ন রিক্রুট এজেন্সিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’
হতাশ না হয়ে ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে দেশেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রনালয়ের সচিব ড.আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। অনুষ্ঠানে প্রবাসী কর্মীদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তির চেক প্রদান ও সিআইপি (এনআরবি) সনদ প্রদান করা হয়।