তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর তা রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে যাবে। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বিধি শাখার একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী যখনই তিনি (মুরাদ হাসান) পদত্যাপপত্র দিয়েছেন, তখন থেকেই ওই পদে আর নেই। প্রজ্ঞাপন জারি হচ্ছে সবাইকে জানানো। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। সন্ধ্যার পর প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠানো হয়েছে।’
এর আগে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় প্রতিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের পক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তরে পদত্যাগপত্র জমা দেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে তার একান্ত সচিব মাহমুদ ইবনে কাসেম পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ করেন।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্রে সই করে পাঠান ডা. মুরাদ হাসান।
জানা গেছে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দেওয়ায় তাকে মঙ্গলবারের (৭ ডিসেম্বর) মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগপত্রে মুরাদ হাসান ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো এ পদত্যাগপত্রে বলা হয়, ‘গত ১৯ মে ২০২১ (তিনি ভুল লিখেছেন, সালটি ২০১৯ হবে) স্মারকমূলে আমাকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। আমি অদ্য ৭ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক।’
চিঠিতে তিনি আরও লিখেছেন, ‘এমতাবস্থায় আপনার নিকট বিনীত নিবেদন এই যে, আমাকে অদ্য ৭ ডিসেম্বর তারিখ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যহতি প্রদানের লক্ষ্যে পদত্যাগ পত্রটি গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি।’
সম্প্রতি তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান এবং তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে একটি অনলাইন সাক্ষাৎকারে অসৌজন্যমূলক কথা বলেন।
এরপরই প্রতিমন্ত্রী মুরাদের একটি কথোপকথন ফাঁস হয়, যেখানে তিনি অশ্লীল ভাষায় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে কথা বলেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে ডা. মুরাদের শাস্তির দাবি ওঠে।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ডা. মুরাদ হাসানের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছিলেন, ‘সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে এবং তিনি তাকে আগামীকালের মধ্যে পদত্যাগ করতে বলেছেন। আমি আজ রাত ৮টায় তাকে বার্তাটি পৌঁছে দিই।’
অন্যদিকে, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দিতে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে সুপারিশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ বাকী বিল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।