1. [email protected] : বাংলারকন্ঠ : বাংলারকন্ঠ
  2. [email protected] : বাংলারকন্ঠ.কম : বাংলারকন্ঠ.কম
  3. [email protected] : nayan : nayan
সোমবার, ০৩ মার্চ ২০২৫, ০৩:১৯ অপরাহ্ন

ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে জুট স্পিনার্স, মনোবল হারায়নি বিনিয়োগকারীরা

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২২
  • ১৪৫ বার দেখা হয়েছে
Jute-Sipinurs-2

নানা সমস্যায় জর্জরিত শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জুট স্পিনার্স পুরো ভেঙ্গে পড়েছে। কোম্পানিটির বিদ্যমান সমস্যা কাটিয়ে ব্যবসায় টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যে কোম্পানিটির ভবিষ্যতে ব্যবসায় টিকিয়ে রাখা নিয়ে খুবই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষক। তারপরেও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাড়িঁয়ে থাকা এ কোম্পানিটির শেয়ার দর অনেক মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির থেকে বেশি। যেখানে দক্ষ ও শিক্ষিত নামের অদক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগও কম না।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কোম্পানিটির ২০২০-২১ অর্থবছরে নিট লোকসান হয়েছে ৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। যাতে করে পূঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ দাড়িয়েছে ৬৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এই কোম্পানিটির চলতি দায় বেড়ে হয়েছে ৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যা মোট সম্পদের থেকেও ৩৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বেশি।

এছাড়া কোম্পানিটিতে শ্রমিক জটিলতা, পাওনাদারদের টাকা পরিশোধে অক্ষমতা, নতুন পণ্য উন্নয়নে অর্থায়নে অক্ষমতা, উৎপাদনে ব্যাঘাত, ঋণের শর্ত পরিপালনের অক্ষমতা, নতুন প্রতিযোগিদের আগমন, মূল ম্যানেজমেন্টের অপর্যাপ্ততা এবং ঋণাত্মক সম্পদ ও পরিচালন নগদ প্রবাহের সমস্যা রয়েছে। এছাড়া জনতা ব্যাংক ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি টাকা আদায়ে আইনগত পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব সমস্যায় জর্জরিত থাকা জুট স্পিনার্সের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে খুবই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষক।

আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস)-৩৬ অনুযায়ি, প্রতি অর্থবছর শেষে কোম্পানির সম্পদ মূল্যায়ন শেষে ইমপেয়ারমেন্ট টেস্ট করা বাধ্যতামূলক (যদি থাকে)। এরকম ইমপেয়ারমেন্ট টেস্ট করার মতো ইন্ডিকেশন জুট স্পিনার্সে রয়েছে। কারন কোম্পানিটির বিগত ৫ বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকায় আর্থিক হিসাবের সঙ্গে সম্পদের প্রকৃত বাজার দর পার্থক্য হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তাসত্ত্বেও ইমপেয়ারমেন্ট টেস্ট করেনি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

জুট স্পিনার্স কর্তৃপক্ষ গত ৩ অর্থবছর ধরে ব্যয় মূল্যে মজুদ পণ্য দেখিয়ে আসছে। কিন্তু তারা ওই মজুদ পণ্যের প্রকৃত বাজার মূল্যকে বিবেচনায় নিচ্ছে না। এছাড়া মজুদ পণ্যের প্রাসঙ্গিক তথ্যের অভাবে নিরীক্ষকও সঠিক মূল্য নির্ধারন করতে পারেননি। এমনকি ২০১৬ সাল থেকে কারখানা বন্ধ থাকায় কোম্পানিটির নিট সম্পদের ৮৪.৩৩% বা ২৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকার মজুদ পণ্যের অস্তিত্ব নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষক।

কোম্পানিটির জন্য ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছ থেকে ২ কোটি ১২ লাখ টাকার ঋণ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে বোর্ড রেজুলুশন বা চুক্তি হয়নি। এছাড়া পরিচালক মুহাম্মদ শামস-উল-কাদিরের স্ত্রী আয়েশা কবিরের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের ৩৫ লাখ টাকা এখনো অপরিশোধিত রয়েছে। তবে ওই অর্থের উপর ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫ বছরের জন্য ২২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার সুদ চার্জ করেছে। যা অপরিশোধিত এবং দায়ের মধ্যে যুক্ত।

জুট স্পিনার্স কর্তৃপক্ষ কোম্পানি আইন ও ইনকাম টেক্স অধ্যাদেশ ভঙ্গ করে পরিচালকদের সঙ্গে অধিকাংশ লেনদেন নগদে করে থাকে বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে দাড়িঁয়ে থাকা ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের জুট স্পিনার্সের শেয়ার দর বুধবার (১৯ জানুয়ারি) লেনদেন শেষে দাড়িঁয়েছে ১২১.৩০ টাকায়। এমন একটি কোম্পানিতেও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিমাণ ২৩.২০ শতাংশ। অথচ তাদেরকে শিক্ষিত ও বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেন। তাদের মতে, এরাও সাধারন বিনিয়োগকারীদের মতো পচাঁ শেয়ারে লোভের বশবর্তী হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ