1. [email protected] : বাংলারকন্ঠ : বাংলারকন্ঠ
  2. [email protected] : বাংলারকন্ঠ.কম : বাংলারকন্ঠ.কম
  3. [email protected] : nayan : nayan
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৪ অপরাহ্ন

খেলাপী ঋণে জর্জরিত শেয়ারবাজারের ৭ ব্যাংক

  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০২২
  • ১৮৯ বার দেখা হয়েছে
BB-and-Bsec

দেশে লাগামহীনভাবে খেলাপি ঋণ বাড়লেও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৭টি ব্যাংক বাদে বাকি ব্যাংকগুলো তুলনামূলক ভালো অবস্থানে আছে। তবে ৭টি ব্যাংকের মধ্যে ৪টির অবস্থা খুবই নাজুক। বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকের সংখ্যা রয়েছে মোট ৩৩টি। এর মধ্যে ৭টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার অনেক বেশি। এর মধ্যে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকে খেলাপির হার ৮২ দশমিক ৬১ শতাংশ, ন্যাশনাল ব্যাংকের ২৩ দশমিক ২৪ শতাংশ, এবি ব্যাংকের ১৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ শতাংশ আর রূপালীর ১৭ দশমিক ২৬ শতাংশ। এই চারটি ব্যাংক বাদ দিলে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ওয়ান, উত্তরা ও আইএফআইসি ব্যাংকের। প্রথমটির খেলাপি ঋণের হার বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ, দ্বিতীয়টির ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং তৃতীয়টির ৭ দশমিক ০৪ শতাংশ।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, এই সাতটি ব্যাংক বাদ দিলে তালিকাভুক্ত বাকি ২৬টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় কিছুটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় রয়েছে। এই ব্যাংকগুলোর গড় খেলাপি ঋণের হার ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এর মধ্যে আটটি ব্যাংকে খেলাপির হার বিতরণ করা ঋণের ৩-৪ শতাংশের মধ্যে, বারটি ব্যাংকের ৪-৫ শতাংশের মধ্যে, চারটি ব্যাংকের খেলাপির হার ৫-৬ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। আর একটি ব্যাংকের খেলাপির হার ৬-৭ শতাংশের মধ্যে এবং আর একটি ব্যাংকের খেলাপির হার ২-৩ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। যদিও ৩৩ ব্যাংকের গড় খেলাপির হার ৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ। তবে যেসব ব্যাংক শেয়ারবাজারে নেই, সেগুলোর গড় খেলাপির হার এর চেয়েও প্রায় তিন গুণ বেশি।

জুন পর্যন্ত শেয়ারবাজারের এই ৩৩টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫৬ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা, যা মোট খেলাপি ঋণের ৪৫ দশমিক ১৬ শতাংশ। তবে সাতটি ব্যাংক বাদ দিলে খেলাপি ঋণের পরিমাণও অনেক কমে যাবে। কেননা এই সাতটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণই ২৭ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা। এই সাত ব্যাংকের গড় খেলাপির হার ২৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

এই প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশান অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) চেয়ারম্যান ও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন অর্থসূচককে বলেন, ‘শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর অনেক বেশি রেসপনসিবিলিটি থাকে। এখানে আরও বেশি কেয়ারফুল হতে হয়। কারণ, বিনিয়োগকারীদের বিষয় সব সময় মাথায় রাখতে হয়। শেয়ারবাজারের বাইরের ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনায় লোক থাকে কম। কোম্পানি ৫ থেকে ৬ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কয়েকজনকে ম্যানেজ করে চললে হয়। কিন্তু শেয়ারবাজারে হাজার হাজার বিনিয়োগকারী থাকে। সেখানে অ্যাকাউন্টেবিলিটি (জবাবদিহি), গভর্ন্যান্স (সুশাসন) রেসপনসিবিলিটি (দায়িত্বশীলতা) অনেক বেশি। এ জন্য ব্যাংকগুলো তুলনামূলক ভালো করছে।’

তবে তালিকাভুক্ত সাতটি ব্যাংকের নাজুক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর মধ্যে একটি ব্যাংকের অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ হয়ে আছে। আর দু,একটিতে পরিচালনা পর্ষদের নিয়ম বহির্ভূত হস্তক্ষেপের কারণে খারাপ অবস্থায় রয়েছে। আর বাকিগুলোতে করোনার কিছুটা প্রভাব থাকতে পারে। কেননা সেই সময় ব্যবসায়ীরা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করতে পারেননি।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুন’২২ শেষে দেশে খেলাপি ঋণের নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। অলোচ্য সময়ে ব্যাংকিং খাতে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

জানা গেছে, করোনার মধ্যে ব্যাংকগুলোকে বেশ কিছু সুবিধা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই সময়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারলেও খেলাপি না করার নির্দেশনা ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল এই নির্দেশনার কারণে খেলাপি ঋণ কমে আসবে ব্যাংকের। কিন্তু ঘটেছে উল্টোটা। এই সময়ে বেড়ে গেছে ঋণ। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর বেশির ভাগের খেলাপি ঋণ বেড়েছে। তবে কোনো কোনো ব্যাংকের কমেছেও। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাংক খেলাপি ঋণের দিক দিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরও ঋণ পরিশোধ করছে না দেশের ব্যবসায়ীরা। ফলে লাগামহীনভাবে বাড়ছেই খেলাপি ঋণ। তাদের মতে, করোনার কারণে গেল দুই বছর আরো সুবিধা পেয়েছে ব্যবসায়ীরা। ফলে ঋণ পরিশোধ না করেও নিয়মিত করে রাখা হয়েছে ওই সময়ের ঋণকে। এসব ঋণকে খেলাপির পরিমাপে আনলে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরো অনেক বেশি হবে। মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণ অর্থনীতিতেও চাপ সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে তারা বলেন, খেলাপিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই খেলাপি ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি পাবে দেশের ব্যাংক খাত। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে শক্তিশালী উদ্যোগ নিতে হবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ