সিলেটের কোনো চা বাগানেই এখন শ্রমিকরা কাজ করছেন না। সোমবার যেসব বাগানের শ্রমিকদের একাংশ কাজ শুরু করেছিলেন, মঙ্গলবার তারাও ফের কর্মবিরতি শুরু করেছেন। এই অবস্থায় দুপুর সোয়া ১২টা থেকে সিলেটের ২৩ বাগানের পঞ্চায়েত কমিটি বৈঠকে বসেছেন।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সকাল থেকে লাক্কাতুড়া, মালনীছড়া ও তারাপুর বাগানের শ্রমিকরা ৩শ’ টাকা মজুরির দাবি নিয়ে মিছিল করে লাক্কাতুড়া বাগান সংলগ্ন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তায় জড়ো হন। তারা রাস্তার পাশে বিভিন্ন ধরনের প্লেকার্ড নিয়ে বসে মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানান। সিলেটের অন্যান্য বাগানের শ্রমিকরাও কাজে যোগদান থেকে বিরত থাকেন।
সোমবার লাক্কাতুড়া, দলদলিসহ যেসব বাগানের শ্রমিকদের একাংশ কাজে যোগ দিয়েছিলেন তারা আজ (মঙ্গলবার) সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। বাগানে গিয়ে তারা চা পাতা চয়ন না করে বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
এদিকে, মজুরি নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনের লক্ষ্যে আজ দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সিলেটের ২৩টি বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির নেতারা লাক্কাতুড়ায় বৈঠকে বসেছেন। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত পঞ্চায়েত কমিটির সভা চলছিলো।
চা শ্রমিক ফেডারেশনের সংগঠক অজিত রায় বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত: দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন চা শ্রমিকরা। ধর্মঘটের ৮ দিনের মাথায় শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে শ্রম অধিদপ্তর ও সরকারের প্রতিতনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসেন চা—শ্রমিক নেতারা। বৈঠক শেষে শ্রমিক নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানান। তবে নেতাদের এই সিদ্ধান্ত জানানোর পরই ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ চা—শ্রমিকরা। এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।এরপর রোববার রাত ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশ চা—শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীীয় নেতাদের সঙ্গে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের বৈঠক হয়। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নতুন মজুরি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান দৈনিক ১২০ টাকা মজুরি ঠিক রেখে চা—শ্রমিকেরা আজ থেকে কাজে যোগ দিবেন। কিছু শ্রমিক কাজে যোগও দিয়েছিলেন সোমবার। আজ থেকে পুনরায় তারা কর্মবিরতি পালন করছেন।