1. [email protected] : বাংলারকন্ঠ : বাংলারকন্ঠ
  2. [email protected] : বাংলারকন্ঠ.কম : বাংলারকন্ঠ.কম
  3. [email protected] : nayan : nayan
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১০ অপরাহ্ন

৩০ হাজার কর্মসংস্থান হবে ঘোড়াশাল-পলাশ সার কারখানায়

  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৬৮ বার দেখা হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি, নরসিংদী : দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় নরসিংদীর ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা। কারখানাটি চালুর পর এখানে কর্মসংস্থান হবে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের। কারখানাটিতে প্রতিবছর প্রায় ৯ লাখ ২৪ হাজার টন ইউরিয়া সার উৎপাদন হবে। যা দেশের মোট ইউরিয়া চাহিদার ৩৫ শতাংশ।

আগামী ১২ নভেম্বর (রোববার) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন। ১১০ একর জমির ওপর নির্মিত এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। দেশের অভ্যন্তরে সারের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি আমদানি নির্ভরতা কমাতে চাই বাংলাদেশ সরকার এই কারখানার মাধ্যমে। কারখানাটির উদ্বোধন উপলক্ষে ঘোড়াশাল তথা নরসিংদী জুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। আগামী রোববার উদ্বোধনের পর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে এর কার্যক্রম।

দেশের কৃষি খ্যাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর সরকার উদ্দ্যোগ নেয় উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন, শক্তি সাশ্রয়ী, পরিবেশ বান্ধব ও আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর একটি সার কারখানা নির্মাণের। ২০২০ সালের ১০ মার্চ ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। যার দায়িত্ব পায় সিসি সেভেন নামে একটি চিনা এবং জাপানের মিৎসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দুই প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার দুইমাস আগেই এর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে পরীক্ষামূলক সার উৎপাদন করছে কারখানাটি।

ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রজেক্টের জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) এ এস এম মোসলেহ উদ্দিন জানান, ‘কারখানটিতে বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় ৩০ বছরের মধ্যে কোনো কিছুতে হাত দিতে হবে না। সেইসঙ্গে বাংলাদেশের প্রকৌশলীরাও ফার্টিলাইজার সেক্টরে এখন অনেক অভিজ্ঞ। যার কারণে কারখানায় যে কোনো সমস্যা হলে আমরা সমাধান করতে সক্ষম।’

এদিকে, ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজারের প্রকল্প পরিচালক মো. রাজিউর রহমান মল্লিক বলেন, কারখানাটি যখন টোটাল অপারেশনে যাবে, তখন ৯৬৮ জন লোকের পার্মানেন্ট কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া ১৪০০ থেকে ২০০০ হাজার লোক কারখানায় ডেইলি বেসিসে কাজ করবে বিভিন্নভাবে। সার কাখানায় লোডিং- আনলোডিং, সার বস্তাবন্দি করা, প্যাক করা, ট্রাকে, ট্রেনে উঠানো এসব জায়গায় কমপক্ষে দুই হাজার লোক কাজ করবে। এই ফ্যাক্টরিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৩০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।

তিনি আরও বলেন, এতো বড় লেটেস্ট টেকনোলজি বিদেশিরা করে দিয়ে যাওয়ার পর যদি বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা চালিয়ে না রাখতে পারেন তাহলে আমাদের লাভ হবে না। আমরা যদি আবার জাপানিদের ডেকে আনি, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, অনেক বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হবে। এজন্য আমরা যেটা করছি তা হলো জাপানিজ কনসালটেন্টদের মাধ্যমে আমাদের দেশের প্রত্যেকটা অফিসার, অপারেটরকে ট্রেনিং করানোর ব্যবস্থা।

বর্তমানে অপারেশন সিস্টেম আমাদের দেশের লোকেরা চাল্লাচ্ছে, তারা (বিদেশি) দাঁড়িয়ে থাকে। এর ফলে আমাদের দেশের লোকদের কনফিডেন্স বাড়চ্ছে। কোনো রকম ভুল হলে তারা (বিদেশিরা) সেটা ধরিয়ে দিচ্ছেন, দেখিয়ে দিচ্ছেন। হাতে- কলমে ট্রেনিং চলছে। আমাদের অফিসার ও অপারেটররা যথেষ্ট অভিজ্ঞ। তারা তাদের সামর্থ্য দেখাচ্ছেন, তাদেরকে যথেষ্ট সাফিসিয়েন্ট ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। আমরা অলরেডি উৎপাদনে চলে গেছি।

আমরা এখন ট্রায়াল রানে আছি। কোনো রকম সমস্যা হচ্ছে কিনা সবকিছুই নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। ট্রায়াল রান আমরা সাকসেসফুলি কমপ্লিট করেছি। আগামী ১২ তারিখে প্রধানমন্ত্রী এসে এই কারখানা উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার পর আমরা পুরোপুরি প্রডাকশনে চলে যাবো।

দুইমাস আগে কারখানাটি চালু হওয়ায় ৩৫০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার অতিরিক্ত সার উৎপাদন হবে। ১১০ একর জমির ওপর নির্মাণাধীন এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এখান থেকে বছরে উৎপাদন হবে প্রায় ৯ লাখ ২৪ হাজার টন ইউরিয়া সার। প্রতিদিন ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদনে সক্ষম দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ অত্যাধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর সারকারখানাটি।

নরসিংদী-মনোহরদী সংসদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ইউরিয়া সার কারখানা এটি। দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় সারের চাহিদা মেটানো, সুলভ মূল্যে কৃষকদের কাছে সার সরবরাহ, আমদানি কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব এই কারখানা।

সার কারখানাটি চালু হওয়ার পর বাংলাদেশের অভ্যন্তরের খাদ্য ঘাটতি কমে যাবে। বর্তমানে দেশে সারের চাহিদা ২৬ লাখ মেট্রিক টন। মোট চাহিদার ৩৫ শতাংশ এখানে উৎপাদিত হবে। উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় মাইল ফলক হয়ে থাকবে এই প্রকল্পটি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ