1. [email protected] : বাংলারকন্ঠ : বাংলারকন্ঠ
  2. [email protected] : বাংলারকন্ঠ.কম : বাংলারকন্ঠ.কম
  3. [email protected] : nayan : nayan
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন

রাঙামাটিতে দুই দিনব্যাপী কঠিন চীবর দান উৎসব শুরু

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৯২ বার দেখা হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি, রাঙামাটি : রাঙামাটি রাজবন বিহারে বেইন কর্মীদের পঞ্চশীল গ্রহণ ও বেইন ঘর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ৪৮তম কঠিন চীবর দান উৎসব। এটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থস্থান।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) ভগবান গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় তার প্রধান সেবিকা বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত নিয়মে বিকেলে বেইন ঘর উদ্বোধন করেন, রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান এবং চরকা থেকে সুতা কাটার মধ্যে দিয়ে বেইনের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট নারী উদ্যেক্তা মঞ্জুলিকা চাকমা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাঙামাটি রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান, বিহার অধ্যক্ষ শ্রীমৎ প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবির এবং বিহারের ভিক্ষু সংঘসহ এ দান অনুষ্ঠানে রাজবন বিহারের সহ-সভাপতি নিরুপা দেওয়ান, রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমীয় কান্তি খীসাসহ গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

রাজবন বিহারের কার্যকরী কমিটির সূত্রে জানা গেছে, রাজবন বিহারের বিশাল এলাকা জুড়ে প্রায় ১২৬টি বেইন ঘর স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় ৫ শতাধিক মহিলা-পুরুষ এই চীবর প্রস্তুত কাজে অংশ নেন।

রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন, বৃহস্পতি ও শুক্রবার এ দুদিনব্যাপী কঠিন চীবর দান উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এর সফলতা কামনা করছি। পাশাপাশি ভগবান গৌতম বুদ্ধের বাণীর মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে শান্তি বিরাজ করুক।

তিনি আরও বলেন, দু’দিনব্যাপী কঠির চীবর দান উৎসব সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপন করার জন্য রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তারা যদি আমাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে না দিতেন তাহলে আমরা এত বড় অনুষ্ঠান করতে পারতাম না।

দেওয়ান বলেন, এ বছর ভারত থেকেও বিদেশি পূণ্যার্থীরা এ কঠিন চীবর দান উৎসবে অংশ নিচ্ছেন।

এদিকে, কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানকে ঘিরে দূর-দূরান্তের পাহাড় থেকে লক্ষাধিক বৌদ্ধ ধর্মালম্বীর সমাগম ঘটে। কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে সার্বিক নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু পরিবেশে উদযাপনের জন্য পুলিশী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এখানে ৫৩০ জন কর্মী সার্বিকভাবে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করছেন। বেইন ঘর ও সুতা কাটার কার্যক্রম উদ্বোধনের পরে শুরু হয় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চীবর প্রস্তুত করার আনুষ্ঠানিকতা। সুতা সিদ্ধ ও রং করা, সুতা টিয়ানো, সুতা শুকানো, সুতা তুম ও সুতা নলীতে ভরা, বেইন টানা দেওয়া, বেইন বুননের মধ্য দিয়ে সারারাত চীবর বুনন কাজ চলে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে আসা পুণ্যার্থীদের জন্য রাত্রী যাপনের জন্য রাজবন বিহারে ধর্মীয় সংগীতের আসর আয়োজন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবির বলেন, কঠিন চীবর দান হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দান। ভগবান বুদ্ধের সেবিকা বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত কঠিন চীবর দান উপলক্ষে তিনি পৃথিবীর সকল প্রাণীর হিতসুখ ও মঙ্গল কামনা করেন। তিনি বলেন, আমাদের এই পূণ্যকাজ যাতে বাধাবিহীন সুষ্ঠুভাবে যাতে সম্পন্ন করতে পারি এই প্রার্থনা ভগবান বুদ্ধের কাছে নিবেদন করছি।

এদিকে, রাঙামাটি কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুল আমিন বলেন, দুই দিন ব্যাপী রাজবন বিহারের কঠিন চীবর দান উৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য রাঙামাটি পুলিশ থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এখানে প্রায় ৩০০ পুলিশ সদস্য নিয়োজিত রয়েছে।

উল্লেখ্য, ভগবান গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় তার প্রধান সেবিকা বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত রীতি-নীতি অনুসরণে ১৯৭৭ সাল থেকে রাঙামাটি রাজবন বিহারে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় অন্যতম শ্রাবক বুদ্ধ শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির (বনভন্তে) প্রথম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। সেই রীতি-নীতি অনুসারে প্রতি বছরের ন্যায় রাঙামাটি রাজবন বিহারে বৃহৎ আকারে কঠিন চীবর দানোৎসব আয়োজন করা হচ্ছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ