জেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরে ঘুমন্ত স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে ঘরে আটকে রেখে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন কামাল হোসেন (৪০) নামের এক অটোরিকশাচালক। ঘটনাস্থলেই মারা গেছে তার ৭ বছর বয়সী মেয়ে আয়েশা আক্তার। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৩ বছর বয়সী ছেলে আবদুর রহমান। কামালের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তারকে (৩৪) আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কামাল হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জসিম উদ্দিন ও বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার ভোররাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বশিকপুর গ্রামের পুরান চতইল্লার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। আটক কামাল হোসেন একই বাড়ির আমিন উল্ল্যাহর ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা মাহফুজ আলম ও সিএনজি অটোরিকশার চালক মানিক হোসেন জানিয়েছেন, কামাল মাদকসহ কয়েকবার পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। মাদক সেবন নিয়ে স্ত্রী সুমাইয়ার সঙ্গে প্রায়ই তার ঝগড়া হতো। মঙ্গলবার ভোররাতে তারা (স্থানীয়রা) চিৎকার শুনে এসে আগুন নেভান। এর আগেই কামালের মেয়ে আয়েশা আগুনে পুড়ে মারা যায়। দগ্ধ হন তার স্ত্রী সুমাইয়া ও ছেলে আব্দুর রহমান।
পুলিশ জানিয়েছে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহত আয়েশার দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কামালের স্ত্রী ও ছেলেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। আটক কামাল পুলিশসহ স্থানীয়দের কাছে স্বীকার করেছেন যে, তিনি নিজেই ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়েছেন। তখন তার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন।
বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বলেছেন, কামাল ঘরে স্ত্রী-সন্তানকে আটকে রেখে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। এতে তার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে আগুনে দগ্ধ হন। এর মধ্যে মেয়েটি ঘটনাস্থলেই মারা যায়। দগ্ধ অবস্থায় স্ত্রী ও ছেলেকে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলেটি মারা গেছে।
চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মফিজ উদ্দিন বলেছেন, কামালের দেওয়া আগুনে ছেলে-মেয়ে দুজন মারা গেছে। তার স্ত্রী দগ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। কামালকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।