1. [email protected] : বাংলারকন্ঠ : বাংলারকন্ঠ
  2. [email protected] : বাংলারকন্ঠ.কম : বাংলারকন্ঠ.কম
  3. [email protected] : nayan : nayan
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ অপরাহ্ন

কারও দয়ায় রপ্তানি হচ্ছে না : বাণিজ্য সচিব

  • আপডেট সময় : সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১৩১ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘মানসম্পন্ন পণ্য কম দামে দিতে পারি বলেই রপ্তানি হচ্ছে’- এমন মন্তব্য করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, আমরা কারও দয়া-দাক্ষিণ্যে রপ্তানি করি না। সব নিয়ম মেনে কোয়ালিটি পণ্য কম দামে দিতে পারি বলেই রপ্তানি হচ্ছে।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে শ্রম অধিকার সংক্রান্ত ন্যাশনাল একশন প্লান (এনএপি)-এর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনার লক্ষে আয়োজিত এক বিশেষ সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তপন কান্তি ঘোষ।

এ সময় শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এহছানে এলাহী ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্য নিয়ে ইউরোপীয় কমিশনের প্রতিবেদনের বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, আমরা প্রায় ২০০ দেশে পণ্য রপ্তানি করি। তার মধ্যে কয়েকটি দেশ খুব বেশি করি, কিন্তু ২০০ দেশে রপ্তানি করি। সুতরাং, আমাদের লক্ষ্য থাকবে কীভাবে প্রতিযোগিতা মূল্যে কমপ্লায়েন্স অর্জন করে। আর ক্রেতার রিকয়ারমেন্ট পূরণ করেই কিন্তু রপ্তানি করতে হয়।

তিনি বলেন, আমরা কারও দয়া-দাক্ষিণ্যে রপ্তানি করি না। আমাদের শ্রমিক-উদ্যোক্তারা অনেক পরিশ্রম করেন। সব নিয়ম মেনে কোয়ালিটি পণ্য আমরা কম দামে দিতে পারি বলেই রপ্তানি হচ্ছে।

সচিব বলেন, রপ্তানি বাজার যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য যা যা করণীয় তা আমরা করবো আমাদের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়ে। আমাদের অর্থনীতির সক্ষমতা, রপ্তানি পরিস্থিতি সবকিছু দেখে এবং আন্তর্জাতিক যে রিকয়ারমেন্ট আমাদের মানতে হবে- সেটা মেনেই আমরা করবো।

তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমরা ২৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করি, সেটা শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায়। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করি, কিন্তু সেখানে কোনও শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায় না। পৃথিবীর মধ্যে বলা যায়, অনেক বেশি শুল্ক দিয়ে বাংলাদেশকে রপ্তানি করতে হয়।

বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে কি না- এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তপন কান্তি বলেন, গেল বৃহস্পতিবারও বলেছি, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো কোনও পরিস্থিতি নেই। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছে, সব দেশের শ্রম পরিস্থিতির আরও উন্নত করতে। আমরা সেটাকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের চলমান যে আলোচনা বলতে পারেন, ত্রি প্লাস ফাইভ অর্থাৎ পাঁচ রাষ্ট্রদূত ও তিন জন সচিব মিলে যে একটা প্ল্যাটফর্ম আছে- সেই বৈঠকটা এ মাসে করার কথা। সেজন্যই আজ বসেছিলাম। এতকাল যে অগ্রগতি হয়েছে, তা কীভাবে জানানো যায়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শ্রম অধিকার সংক্রান্ত সমঝোতায় যেসব ইস্যু ছিল, সেগুলো নিয়ে বৈঠকে কোনও আলোচনা হয়েছে কি না- সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বিবার্ষিকী মূল্যায়ন প্রতিবেদন, সেটা কিন্তু সবার সঙ্গে আলোচনা করেই করা হয়েছে। সর্বশেষ ১২ থেকে ১৬ নভেম্বর একটা উচ্চপর্যায়ের দল ঢাকায় এসে সব অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

‘আর বাংলাদেশ যে সংস্কারগুলো নিয়ে এসেছে, সেগুলোর প্রশংসাও করেছেন। বলেছেন, আংশিকভাবে বাস্তবায়ন করেছে, এখন তাদের চাওয়াগুলো আরও বেশি বাস্তবায়ন দেখতে চান। ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশ যেহেতু শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়, সেহেতু তাদের চাওয়াগুলোকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিই। আমাদের ৬০ শতাংশ রপ্তানি যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নে যায়। মোট রপ্তানির ৬০ ভাগ। এটা একটা বিশাল বাজার, আমাদের এটা রক্ষা করতে হবে। আমরা তাদের সঙ্গে মিলে কাজ করে যাচ্ছি’- বলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব।

বেপজা আইনের সংশোধন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অংশীজন যারা আছেন, বিদেশি বিনিয়োগকারী সবার সঙ্গে আলোচনা করেই করা হবে, কী করা হবে। এরইমধ্যে বেপজা আইনে অনেকগুলো সংশোধন আনা হয়েছে। এখন সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেবেন, বিশেষ করে আইএলও আইনে ত্রিপক্ষীয়ভাবেই সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এটাও সরকার, শ্রমিক ও মালিকপক্ষ মিলে ঠিক করবেন, কীভাবে করা হবে। বেপজার শ্রমিক কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশনকে ট্রেড ইউনিয়ন করতে হবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি।

এসব সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করা হবে কি না- জানতে চাইলে সচিব বলেন, তাদের চাওয়াগুলো যে পূরণ হয়েছে, যেমন বেপজা আইনে সংস্কার করা হয়েছে, শ্রম আইনটিই বেপজার মতো প্রযোজ্য হবে, বাংলাদেশের শ্রম আইনে সংশোধন আনা হয়েছে, এই অগ্রগতি যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হবে। এজন্য কয়েকদিন লাগবে, প্রস্তুতি নিতে হবে।

বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পরে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কিছু কমিটমেন্ট ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বা অন্য দেশগুলো দেখতে চায়। সেগুলো বাস্তবায়ন কীভাবে করা যায়, সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা অনেক ক্ষেত্রে উন্নতি করেছি। সম্প্রতি বাংলাদেশ শ্রম আইনে বেশ সংশোধনী আনা হয়েছে। বেজা বা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ আইন-২০১০ সেখানে কিন্তু সংশোধনী আনা হয়েছে। এগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বক্তব্য ছিলো বা তাদের কিছু চাওয়া ছিলো, সেগুলো পূরণ করার জন্যেই এই সংস্কার বা আইনের পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আলোচনা করেছি, এগুলো তাদের জানানো হবে ভালোভাবে। একই সঙ্গে আমাদের উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার যে পথ চলা সেখানে আরও কী কী করতে হবে বা করা যেতে পারে- সেই বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের স্টেকহোল্ডার এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ উনাদের বলেছি, এর প্রস্তুতি আমাদের নিতে হবে।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমরা গত ১০ বছরে অনেক সংস্কার এনেছি। ২০১০ সাল থেকে ইতোমধ্যে তিন বার আমাদের শ্রম আইনে সংস্কার আনা হয়েছে। চার বার নিম্নতম মজুরি বোর্ড নিম্নতম মজুরি ঘোষণা করেছে। সুতরাং, আমরা প্রতিনিয়ত সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের যে শিল্পায়ন হচ্ছে, সেখানে যে কর্মপরিবেশ; শ্রম অধিকার এসবগুলো নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বেপজা আইনটাও সংশোধন করা হবে। সংশোধন করে কীভাবে হবে, সেটা সব স্টেকহোল্ডাররা আলোচনা করেই ঠিক করা হবে। এখানে বিনিয়োগকারী আছেন, শ্রমিক আছেন, মালিকপক্ষ আছেন; সরকার আছে- সবাই মিলেই ঠিক করা হবে কোন পর্যায়ে আমরা সংস্কারটা করবো। ইতোমধ্যে ২০১৮ সালের বেপজা আইনে অনেক সংস্কার আনা হয়েছে। সেগুলো আমরা তাদের বলেছি এবং তারা এ ব্যাপারে সন্তুষ্ট।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ