জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে রাস্তায় ফেলে যাওয়া ৯৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা রাবিয়া বেগমের ঠাঁই হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে। বর্তমানে ওই বৃদ্ধাকে আশ্রয় দেওয়াসহ দেখভাল করছে সদর থানা পুলিশ। পুলিশ ধারণা করছে, রাবিয়া বেগম বয়সের ভারে নুয়ে পড়ায় সন্তানরা তাকে রাস্তায় ফেলে গেছে।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) থানায় দিয়ে দেখা গেছে, বৃদ্ধা রাবিয়া বেগমের চোখে পানি। বয়সের ভারে চলাফেরা করতে পারেন না তিনি। স্বামী মারা যাওয়ার পর তার বেঁচে থাকার শেষ আশ্রয় ছিল চার সন্তান। কিন্তু যাদের সারাটা জীবন আদর ও স্নেহ দিয়ে বড় করছেন আজ তাদের কাছেই তিনি বড় বোঝা।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, আজ সকালে জেলা শহরের থানাপাড়া মোড়ে রাবিয়া বেগমকে পড়ে থাকতে দেখেন রাব্বি সরদারসহ কয়েকজন যুবক। পরে তারা ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে বৃদ্ধাকে পাঠানো হয় গোপালগঞ্জ সদরের এসিল্যান্ডের কাছে। সদর এসিল্যান্ডের নির্দেশে রাবিয়া বেগমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।
এদিকে, বয়সের কারণে খুব বেশি কথা বলতে না পারা রাবিয়া বেগম নিজের নাম আর তার চার ছেলে-মেয়ে রয়েছে বলে জানাতে পেরেছেন। এর বাইরে তিনি কিছুই বলতে পারেননি।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নীপা ব্যাপারী বলেন, শতবর্ষী এই বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থা তেমন ভালো নয়। তার শরীর আঘাতের চিহ্ন ও বুকে ব্যাথা রয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর পুলিশ তাকে নিয়ে চলে যায়।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী পরিচালক সুলতানা জাহিদ পারভীন বলেন, ডাক্তারী পরীক্ষা শেষ বৃদ্ধা রাবিয়া বেগমকে সমাজসেবা অধিদপ্তরে আনা হয়। আইনী প্রক্রিয়া শেষে এসিল্যান্ড মহোদয়ের নির্দেশ গাজীপুরের পূবাইল বৃদ্ধাশ্রমে রাতেই পাঠানো হবে তাকে।
গোপালগঞ্জ জেলা সুজনের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, বৃদ্ধ বাবা-মাকে রাস্তায় ফেলে যাওয়া সমাজের অবক্ষয় প্রমাণ করে। সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দোষীদের আইনের আওতায় আনা উচিত।