1. [email protected] : বাংলারকন্ঠ : বাংলারকন্ঠ
  2. [email protected] : বাংলারকন্ঠ.কম : বাংলারকন্ঠ.কম
  3. [email protected] : nayan : nayan
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫১ পূর্বাহ্ন
হেডলাইন :
সাউথইস্ট ব্যাংক ও বেঙ্গল গ্লাস ওয়ার্কসের মধ্যে সমঝোতা স্মারক  শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনে কঠোর হতে চাই না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ওয়ালটন ডেস্কটপে বিশাল মূল্যহ্রাস, অনলাইন অর্ডারে আরো ১০% ছাড় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যাত্রাবাড়ী-ডেমরায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন ওয়ালটনের সঙ্গে সিটি ব্যাংকের এমপ্লয়ি গ্রিন ব্যাংকিং চুক্তি  নারায়ণগঞ্জে সোনালী ব্যাংকের মিট দ্য বরোয়ার ও গ্রাহক সমাবেশ ভোজ্যতেল আমদানিতে ভ্যাট কমল আরও ৫ শতাংশ শিক্ষায় কমপক্ষে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হবে: তারেক রহমান এবার ভরিতে ২৯৩৯ টাকা বাড়ল সোনার দাম ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

মেডিকেলে চান্স পেলেন এতিম ৩ জমজ ভাই

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৮৬ বার দেখা হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি, বগুড়া : বাবা ছিলেন হাইস্কুলের শিক্ষক। তিনি ২০০৯ সালে মারা গেছেন। সন্তানদের পড়ালেখা করাতে নিজের জমি বিক্রি করেছেন মা। অর্থনৈতিকসহ নানা সমস্যা থাকলেও পড়ালেখা চালিয়ে গেছেন। অবশেষে রত্নগর্ভা মায়ের পরিশ্রম সার্থক করেছেন তিন সন্তান। বগুড়ার ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ী গ্রামের তিন জমজ ভাই মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

তিন ভাই হলেন- মাফিউল হাসান, সাফিউল ইসলাম ও রাফিউল হাসান। তাদের বাবা মরহুম গোলাম মোস্তফা। মা আর্জিনা বেগম একই সঙ্গে জন্ম নেয়া তিন সন্তানকে আগলে রাখেন। নিজের সর্বস্ব দিয়ে সন্তানদের সুশিক্ষিত হিসেবে গড়তে করে গেছেন সংগ্রাম। ফলও পেয়েছেন আর্জিনা বেগম।

মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ী গ্রামে গিয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য পিতৃহারা তিন জমজ ভাইয়ের চেষ্টার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিন ভাইয়ের মাধ্যমিকের পড়ালেখা ধুনট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে।

২০২০ সালে সেখান থেকে তিন ভাই এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস নিয়ে পাস করেন। উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য তারা ভর্তি হন বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজে। ২০২২ সালে গোল্ডেন এ প্লাস পান এই তিন ভাই।

২০২৩ সালে প্রথমবারের চেষ্টায় তিন ভাইয়ের মধ্যে শুধু মাফিউল হাসান ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। এবার সেই আফসোস পুষিয়ে নিয়েছেন বাকি দুই ভাই। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় সাফিউল ইসলাম দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে ও রাফিউল হাসান নোয়াখালীর আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

প্রথমবার পরীক্ষায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের দন্ত বিভাগে পড়ার সুযোগ পান মাফিউল হাসান। তবে ভর্তি হয়েও মন খারাপ ছিল বাকি দুই ভাইয়ের জন্য। মাফিউল বলেন, ‘সায়েন্সের ছাত্র হিসেবে সবার মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দিকে ফোকাস করা উচিত। নিপীড়িত মানুষের সবচেয়ে খারাপ সময়ে সেবা দেয়ার সুযোগ হলো ডাক্তারি পেশা। এ কারণে মূলত ডাক্তারি পেশায় আসার প্রবল ইচ্ছা ছিল। তিন ভাই মেডিকেল কলেজে ভর্তির প্রস্তুতি নেয়া শুরু করি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত প্রথমবার আমার হলেও দুই ভাইয়ের অল্পের জন্য মিস হয়।’

সাফিউল ইসলাম বলেন, ‘আমার ইচ্ছা আছে, আমার গ্রামের মানুষ যারা গরিব, দিনমজুর, রিকশাওয়ালা এবং হুজুরদের নিয়ে কাজ করা। আমি যখন ভালো ডাক্তার হবো, ছুটিতে এলে তাদের ফ্রিতে চিকিৎসা দেবো।’

মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য পরিশ্রমের পাশাপাশি ভাগ্যও লাগে মন্তব্য করে রাফিউল জানান, ‘প্রথমবার ভর্তি না হতে পেরে খারাপ লাগেনি। বরং মনে হয়েছে, যে টাকা খরচ হয়েছে তার কিছুটা উসুল হলো। আর আমাদের তো আরেকবার সুযোগ ছিল, তাই ভেঙে পড়িনি।’

রাফিউল বলেন, ‘উচ্চমাধ্যমিকে থাকার সময় মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন বোনা শুরু করি। সেই জন্য মেডিকেলের দিকে ধাবিত হই। ডাক্তারি মহান পেশা। এ পেশার মাধ্যমে মানুষকে সরাসরি সেবা করা যায়।’

ধুনট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক গোলাম ফারুক বলেন, ‘তিন জমজ ছেলে আমার ভাতিজা। তাদের বাবা ২০০৯ সালে মারা যাওয়ার পর থেকে মা সংসারের হাল ধরে। ওদের মা অনেক কষ্টে সন্তানদের পড়ালেখা করিয়েছে।’

মেডিকেলে সু‌যোগ পাওয়া তিন সন্তানের রত্নগর্ভা মা আর্জিনা বেগম বলেন, ‘এরা ছোটবেলা থেকে পড়ালেখায় ভালো। ভালো রেজাল্ট করেছে। আলাদা গাইড দেয়া লাগেনি। নিজের ইচ্ছায় তারা পড়ালেখা করেছে। পাইলট স্কুল থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পায়। তখন ঠিক করলাম, লেখাপড়া ভালো মতোই করাবো। শিক্ষকের ছেলে, যেন তার নাম থাকে। তখন তাদের পিছে টাকা খরচ করেছি, যাতে মানুষের মতো মানুষ হয়। তারপর তারা মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। এ জন্য আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া।’

সন্তানদের পড়ালেখা করাতে নিজের জমি বিক্রি করেছেন জানিয়ে আর্জিনা বেগম, ‘আমার শেরপুরে জমি ছিল, সেটা বিক্রি করেছি। বাপের বাড়ির জমি ছিল সেটাও বিক্রি করেছি। জমি বিক্রি করেই এতদূর পড়িয়েছি।’

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ