জেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহে চালককে হাত-পা ও মুখ বেঁধে হত্যার পর অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ফুলপুরের বাতিকুড়া গ্রামের মো. আলমগীর (২০), তারাকান্দার পূর্ব কামারিয়ার মো. রাকিবুল হাসান তপু (৩০), একই উপজেলার হরিপুর গ্রামের মো. রাকিব হাসান ওরফে রাকিবুল ইসলাম (২১) ও টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার রামপুর গ্রামের মো. আরাফাত হোসেন বাবু (২৭)। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, গত ৯ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ নগরীর জয়নুল আবেদিন পার্কের পাশে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় থেকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় হাসেম মিয়া (২৯) নামে অটোরিকশা চালকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে গ্রেপ্তারকৃতরা। হাসেম সদর উপজেলার দাপুনিয়া কলাপাড়া গ্রামের মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই নিলু মিয়া বাদি হয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন। এই ঘটনার পর কোতোয়ালি ও গৌরীপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) হত্যাকান্ডে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যা মিশনে জড়িতরা জানায়, ৮ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে আলমগীর, রাকিবুল হাসান তপু, রাকিবুল, আরাফাত হোসেন বাবুসহ ৫ জন একত্রে স্মৃতিসৌধের মাঠে বসে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক রাত ১২টার দিকে হাসেমের অটোরিকশা ভাড়া করে সার্কিট হাউজ মাঠে নিয়ে যায়।
তারপর সার্কিট হাউজ মাঠে দাঁড়িয়ে চালক হাসেমের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে তারা এলোপাতাড়ি মারপিট করে বেড়িবাঁধের নিচে নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে হাত-পা ও মুখ বেঁধে চাকু দিয়ে বুকে ও পিঠে আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে। তারপর লাশ মাটিতে ফেলে অটোরিকশাটি নিয়ে শম্ভুগঞ্জ এলাকায় ৩৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে নিজেদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগি করে নেয়। হত্যার পর লুট করে নেওয়া অটোরিকশাটি ক্রয় করায় নগরীর শম্ভুগঞ্জ এলাকার ফরহাদ (৩১), সুমন শেখ (৩৫) এবং আলমকে (৪০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, আলমগীরের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা, তপুর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা, রাকিব হাসানের বিরুদ্ধে একটি চুরি মামলা, আরাফাত হোসেন বাবুর বিরুদ্ধে একটি হত্যা ও চুরি মামলা রয়েছে। এছাড়াও তারা মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলো। তাদেরকে বিকেলেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।