জেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় পুঁতে রাখা অবস্থায় ধানক্ষেত থেকে সানজিদা নামে ৯ বছরের এক মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শিশুটির সৎ বাবা সন্তানকে হত্যার পর ধান ক্ষেতে পুঁতে রাখেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই কাজে সহায়তা করেন শিশুটির প্রতিবেশি মামা।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে পুলিশ উপজেলার সলঙ্গা ইউনিয়নের ওলিদহ পশ্চিমপাড়া এলাকার একটি ধান ক্ষেত থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত শিশু সানজিদা খাতুন আমসড়া গ্রামের শাহিনের মেয়ে। এ ঘটনায় সৎ বাবা শরিফুল ও প্রতিবেশী মামা হাসমতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সৎ বাবা শরিফুল ওলিদহ গ্রামের মো. নুরালের ছেলে ও হাসমত আলী একই গ্রামের আবু হানিফের ছেলে।
সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক বলেন, নিহত সানজিদার মা জরিনা খাতুন প্রথম স্বামী শাহিনের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পর শরিফুলকে বিয়ে করেন। তিনি ছিলেন শরিফুলের চতুর্থ স্ত্রী। তাদের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে দেড় মাস আগে জরিনা বাবার বাড়ি চলে যান। শরিফুল তাকে ফিরিয়ে আনতে অনেক চেষ্টা করেন কিন্তু ফিরে না আসায় জরিনার প্রতিবেশী ভাই হাসমতের শরণাপন্ন হন তিনি। হাসমত আলী তাকে বলেন, সানজিদাকে অপহরণ করে তার হাতে তুলে দিলেই তোমার স্ত্রীকে ফেরত পাবে।
এ অবস্থায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি মাদরাসায় যাওয়ার পথে হাসমত ও শরিফুল সানজিদাকে অপহরণের চেষ্টা করে। তারা চিপসের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় সানজিদা চিৎকার করলে তাকে গলাটিপে হত্যার পর কবরস্থানের জঙ্গলে মরদেহ ফেলে রেখে যায়। ওই রাতেই তারা মরদেহ পাশের একটি ধান ক্ষেতে পুঁতে রাখে।
এদিকে, অনেক খোঁজাখুঁজির পর সানজিদার সন্ধান না পেয়ে গত ১১ ফেব্রুয়ারি তার নানা জহুরুল ইসলাম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
ওসি বলেন, জিডি হওয়ার পর পুলিশ অনুসন্ধান চালিয়ে ওই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেন তারা। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, ধান ক্ষেতে পুঁতে রাখা অবস্থায় সানজিদার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।