লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : আবেগের জায়গা থেকে বাবা-মায়ের পাশে কবর খুঁড়ে শেষ শয্যার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ওসমান হারুন নামের এক মাদরাসা শিক্ষক। নিজের কবরের সঙ্গেই স্ত্রী পারভীন বেগমের কবরও খুঁড়ে রেখেছেন তিনি। মৃত্যুর আগে কবর খুঁড়ে রাখার এমন ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। আশপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন আসছেন কবর দুটি দেখতে। আলেম সমাজ জানিয়েছে, মৃত্যুর আগে কবর খুঁড়ে রাখার কোনো বিধান নেই।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের পাচপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ওসমান হারুন। তিনি সদরের টুমচর ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার বিএসসি শিক্ষক। এক সপ্তাহ আগে, ওসমান হারুন তাদের পারিবারিক কবরস্থানে নিজের জন্য কবর খুঁড়েছেন। স্থানীয় রাজমিস্ত্রি দিয়ে কবরের চারপাশে আরসিসি ঢালাই দিয়েছেন। নিজের অপর পাশে স্ত্রীর জন্যও খুঁড়েছেন কবর। দুই কবরের দৈর্ঘ্য ১৫ ফুট। এর ঠিক পাশেই টাইলসে মোড়ানো তার (ওসমান হারুন) বাবা-মায়ের কবর। কবরস্থানের পাশেই পাচপাড়া বাইতুল আমান জামে মসজিদ ও একটি নূরানী মাদরাসা রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মান্নান, শরীফ হোসেন, আমির হোসেন, জুয়েল বলেন, ওই শিক্ষকের মৃত্যু এখানে হবে কিনা আল্লাহ ছাড়া কে জানে? তার বিষয় তিনি যেমন বুঝেছেন তেমনই বাড়ির সামনে কবর খুড়ে রেখেছেন। মূলত কবরের জায়গা দখল করার জন্য তিনি এমন কাজ করতে পারেন। দ্রুত কবরটি ভেঙে দিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসমান হারুন বলেন, কখন কোথায় মারা যাই, আল্লাহ ভালো জানেন। স্থানীয় মানুষ নানা কথা বলছে। আবেগ থেকেই নিজের কবর খুঁড়ে রেখেছি। আসলে এটি কোনো সওয়াবের কাজ নয়। তারপরও আবেগ থেকে করেছি। এখন বালু দিয়ে ভরাট করে রাখবো। কবরের ভেতরে দেওয়াল দিয়ে পাকা করেছি। মৃত্যুর পর কবর খুঁড়তে যেন কাউকে পরিশ্রম করতে না হয়, সেই ভাবনা থেকেই এ কাজটি করেছি।
তিনি জানান, এর আগেও মায়ের জন্যও এমন কবর করেছিলেন তিনি। মায়ের মৃত্যুর পর ওই কবরেই তাকে দাফন করা হয়েছিল। তাই এখন নিজের ও স্ত্রীর জন্য করেছেন। এটিতে আযাব হওয়ার সম্ভাবনা আছ বলেও জানান তিনি।
পাচপাড়া বাইতুল আমান জামে মসজিদের ইমাম ও পাচপাড়া নূরানী মাদরাসার মুহতামিম হাফেজ মাওলানা মো. ইসমাইল বলেন, এধরণের কবর ইসলাম কোনো ভাবেই সাপোর্ট করে না। তিনি (ওসমান হারুন) সমাজের বিচক্ষণ মানুষ। তার এমন কাণ্ডে সমাজের ওপর বাজে প্রভাব পড়বে। তাকে অনুসরণ করে কেউ এমন কাজ করলে তিনিও (ওসমান হারুন) গুনাহের অংশীদার হবেন বলে মন্তব্য জানান এই আলেম।