আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এই পৃথিবীর ৮০ কোটিরও বেশি মানুষ প্রতিদিন অনাহারে দিন পার করছেন। অথচ প্রতি বছর এই গ্রহে অন্তত ১০৫ কোটি টন খাবার নষ্ট হয়। চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘের ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স রিপোর্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের পরিবেশ বিভাগের পক্ষ থেক ২০২৪ সালের খাদ্য বর্জ্য সূচক প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গোটা পৃথিবীতে যত খাবার তৈরি হয়, তার এক পঞ্চমাংশই নষ্ট হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক জন বাংলাদেশি বছরে গড়ে ৮২ কেজি খাবার নষ্ট করেন। অপচয়ের এই বিচারে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন থেকে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে জনপ্রতি ৭৩ কেজি, রাশিয়য়া ৩৩ কেজি এবং চীনে ৭৬ কেজি খাবার নষ্ট হয়।
এতে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে এক বছরে ১০৫ কোটি টন খাবার নষ্ট হয়েছে। অর্থাৎ জনগণের জন্য যে খাবার পাওয়া যেত, তার মধ্যে ১৯ শতাংশই নষ্ট হয়। এই হিসাবে, এক বছরে ১ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থাত্ প্রায় ৮৪ লক্ষ কোটি টাকার খাদ্য নষ্ট হয়েছে। এর ফলে গোটা পৃথিবীতেই খাদ্য বর্জ্য অত্যন্ত বড় সঙ্কটে পরিণত হয়েছে। একদিকে, কোটি কোটি মানুষ অনাহারে দিনযাপন করছেন, আর অন্য দিকে টন টন খাবার নষ্ট হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। জলবায়ু পরিবর্তনের গতি যেমন ত্বরান্বিত হচ্ছে, তেমনই জীববৈচিত্র নষ্ট হচ্ছে এবং বাড়ছে দূষণ।
রিপোর্টে মাথাপিছু খাবার নষ্টের পরিসংখ্যানও তুলে ধরা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, প্রতি বছর একজন ব্যক্তি পিছু ৯৭ কেজি খাবার নষ্ট হয়, যা থেকে অনাহারে থাকা মানুষের প্রতিদিন ১ দশমিক ৩ বারের খাবারের জুটে যাওয়া সম্ভব। শুধুমাত্র ধনী দেশগুলিতেই খাবার নষ্ট হয় না, মধ্যবিত্ত এবং দরিদ্র দেশগুলিতেও প্রচুর খাবার নষ্ট হয়। তবে গ্রামাঞ্চলে খাদ্য বর্জ্যের পরিমাণ তুলনামূলক কম। উচ্ছিষ্ট খাবার পশু-পাখিদের খাইয়ে দেওয়া হয় বলেই গ্রামের দিকে খাদ্য বর্জ্য তুলনামূলক কম বলে মনে করছেন গবেষকরা।
গৃহস্থের বাড়িতেই সবচেয়ে বেশি খাবার নষ্ট হয়। গৃহস্থের রান্নাঘর থেকে বছরে ৬৩ কোটি ১০ লাখ টন খাবার নষ্ট হয়, যা মোট খাদ্য বর্জ্যের প্রায় ৬০ শতাংশ। খাদ্য পরিষেবা এবং খুচরা ব্যবসায় খাবার নষ্ট হয় যথাক্রমনে ২৯ কোটি এবং ১৩ কোটি ১০ লাখ টন করে।