সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি স্বামীর চিকিৎসার বিষয়ে জরুরি বিভাগে কথা বলতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন স্ত্রী। এ সংক্রান্ত সিটি ক্যামেরার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।
কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থেকে কিছু দিন ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন উপজেলার কয়লা ইউনিয়নের আলাইপুর গ্রামের শেখ আবু তালেব। সোমবার (১ এপ্রিল) রাতে আবু তালেবের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তার স্ত্রী সুফিয়া খাতুন (৫৫) জরুরি বিভাগে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসককে জানালেও তারা বিষয়টি গুরুত্ব দেননি।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে তিনি আবারও জরুরি বিভাগে যান। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মেডিকেল অফিসার ডা. তানভীর জাহান, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ফরহাদ হোসেন, ওয়ার্ড বয় শরীফ হোসেন। তখন কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সুফিয়া খাতুনকে মারধর করা হয়।
ওই রুমে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেছে দেখা যায়, কথা বলার এক পর্যায়ে সুফিয়া খাতুনের ঘাড় ধাক্কা ও হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে মুখে আঘাত করেন ফরহাদ হোসেন। পরে ওয়ার্ড বয় শরিফ হোসেন দৌঁড়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এবং সুফিয়াকে জরুরি বিভাগের বাইরে পাঠিয়ে দেন।
সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী দীর্ঘ দিন অসুস্থ। আমি অর্থের অভাবে ভালো ডাক্তার দেখাতে পারছি না। যে কারণে কলারোয়া হাসপাতালে ভর্তি রেখেছি। সোমবার রাতে স্বামীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আমি প্রথমে নার্সদের কাছে যাই। তারা আমাকে নিচে ডাক্তারের কাছে যেতে বলেন। আমি নিচে গিয়ে ডাক্তারদের বললে তারা বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। সকালে আবারও আমি ডাক্তারের কাছে যাই। সেখান থেকে আমাকে বলেন, আপনার রোগী এখন নিয়ে চলে যান। কথা বলতে বলতে ফরহাদ হোসেন আমার ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিচ্ছিলেন। আমি তাকে বলি আমার গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন? তাঁর হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে আমার মুখে আঘাত করেন।’
এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনেছি। এটি দুঃখজনক ঘটনা। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।’
কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি এবং সিসি ফুটেজ দেখেছি। এটি দুঃখজনক ঘটনা। আমরা দ্রুত তদন্ত কমিটি করে দোষীকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব।’
এ বিষয়ে কলারোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন সুফিয়া খাতুন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি দুঃখজনক। অভিযোগ পেয়েছি। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’